কোটি টাকা জমা থাকলেও ফেরত পাবেন এক লাখ!
আমানত সুরক্ষা আইন ২০২০-এর খসড়া অনুমোদনে আতঙ্কের মধ্যে আছেন প্রবাসীরা। নতুন আইনে বলা হয়েছে, ব্যাংক দেউলিয়া হলে গ্রাহকের কোটি টাকা জমা থাকলেও ফেরত পাবেন সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা। কোনো ব্যাংকে গ্রাহকের একাধিক একাউন্টে এক লাখ টাকার বেশি থাকলেও তিনি সর্বোচ্চ পাবেন এক লাখ টাকাই। এমন আইন বাস্তবায়নের আগে তা আরেকবার ভেবে দেখার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
২ ফেব্রুয়ারি ‘আমানত সুরক্ষা আইন ২০২০’-এর খসড়াটি চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিদ্যমান ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন ২০০০’ রহিত করে নতুন এই আইন চালু করা হবে। এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সব মহলে।
আইনটিতে যেসব বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া বা বন্ধ হলে আমানতকারীরা এক লাখ টাকার বেশি থাকলেও তিনি তহবিল থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন। এতে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের মেয়াদি আমানতকারীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন।
সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, মানুষ যদি তার আমানতের বিষয়ে সন্দিহান হয়ে যায়, তখন কিন্তু আমানত রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।
প্রবাসীরা বলছেন, ব্যাংকিং সেক্টরের নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা বড় অঙ্কের আমানত রাখছেন। এই আইন চালু নিয়ে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী গোলাম জাকির চৌধুরী বলেন, কিছু কিছু ব্যাংক বাংলাদেশে ভীষণভাবে বদনামি হয়ে গেছে, লুট-পাট এসবের কারণে, এসবের মধ্যেও আমরা টাকা রাখতাম তার একমাত্র কারণ সরকার বলেছে যে আপনার টাকা নিরাপদ আছে। এখন যদি সরকার এই কথা বলে তাহলে আমাদের আর টাকা রাখা সম্ভব হবে না।
প্রবাসী আর প্রবীণ আমানতকারীদের উৎকণ্ঠা দূরীকরণে আইনটি কার্যকরের আগে আরও যাচাই বাছাই করার সুপারিশ করেছেন সোনালী ব্যাংকের সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক এ কে শেরাম।
তিনি বলেন, দুদিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আমাদের আমানতকারীরা। আমার মনে হয় বিষয়টি আরো পর্যালোচনা করা উচিত, আরেকটু চিন্তাভাবনা করে এর কোনো পরিবর্তন করা যায় কিনা।
চালু থাকা ব্যাংক আমানত বীমা আইনে শুধু ‘ব্যাংক’ অন্তর্ভূক্ত ছিল। নতুন আমানত সুরক্ষা আইনে ব্যাংকের পাশাপাশি ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান’কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।