ওসির ভয়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ব্যবসায়ী

0

ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে পুলিশের পক্ষে চাঁদা তুলতে রাজি না হওয়া ও চাঁদা না দেওয়ায় দুই ব্যবসায়ীকে ফাঁড়িতে আটকে রেখে সাভারের ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ওসি) এমারত হোসেনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে প্রতিবন্ধী সবজি ব্যবসায়ী ইউনুস আলী (৫৫) চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ব্যবসায়ী দ্বীন ইসলাম (৪২)। তাকে মারধর ও ভুয়া মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছেন ওসি।

দ্বীন ইসলামের অভিযোগ, হেমায়েতপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের পক্ষে চাঁদা আদায় করেন ৬-৭ জন। প্রায় সাত মাস আগে ট্যানারি ফাঁড়ির ইনচার্জ এমারত হোসেন ভয় দেখিয়ে আমাকে ফুটপাত থেকে তাদের জন্য চাঁদা আদায় করতে বাধ্য করেন। প্রত্যেক দোকান থেকে দিনে ৫০০ টাকা করে প্রায় ১০ হাজার টাকা আদায় করে দিতাম। মাঝেমধ্যে টাকা আদায়ে দেরি হলে গালাগাল ও মারধর করা হতো। এক সপ্তাহ আগে চাঁদা তুলতে অস্বীকৃতি জানালে এমারত ক্ষিপ্ত হয়ে বাজার থেকে আমাকে ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে আটকে রেখে মারধর করেন। চাঁদা আদায় না করলে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন তিনি। এর পর থেকে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। দ্বীন ইসলামের স্ত্রী শাহানাজ আক্তার বলেন, ‘চাঁদা তুলতে রাজি না হওয়ায় আমার স্বামীকে ফাঁড়িতে আটকে রেখে মারধর করেন ওসি এমারত হোসেন। সারা দিন মারধর করে সন্ধ্যায় ফের চাঁদা তুলে দেওয়ার শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপরই আমরা পালিয়ে আসি।’

প্রতিবন্ধী ইউনুস আলী বলেন, ‘একসময় ভিক্ষা করতাম। এক ব্যক্তি কিছু টাকা দিলে ভিক্ষা ছেড়ে সবজি বেচা শুরু করি। দিনে পুলিশকে ৫০০ টাকা করে দিয়ে ফুটপাতে ব্যবসা করে আসছিলাম। জানুয়ারিতে সন্তানকে স্কুলে ভর্তি ও বই কেনায় বাড়তি খরচ হওয়ায় চাঁদা দিতে পারিনি। এজন্য গত বুধবার ওসি এমারত আমাকে ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে পিটিয়ে আহত করে। পরে আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে আসি। কিন্তু ব্যবসায়িক জায়গাটি ফিরে পাইনি। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ওসি অন্য আরেকজনকে সেটি দিয়েছেন বলে জেনেছি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে আছি।’

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডের দুই পাশের ফুটপাতে ফল, চটপটি, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের তিন শতাধিক অস্থায়ী দোকান রয়েছে। এখান থেকে প্রতিদিন পুলিশের পক্ষে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকেই কয়েকজনকে টাকা তুলতে বাধ্য করেন এমারত। সন্ধ্যার পর ফুটওভার ব্রিজের নিচে এসে টাকা বুঝে নিয়ে যান তিনি।

এ বিষয়ে হেমায়েতপুর হরিণধরা ট্যানারি ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) এমারত হোসেন বলেন, ‘এসব বিষয়ে ফোনে কথা বলা ঠিক হবে না। আপনি ফাঁড়িতে আসেন, সাক্ষাতে কথা বলব।’

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘পুলিশের পক্ষে ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজির তথ্য আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com