আনোয়ার ইব্রাহীমের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের দল ও নিজ শিবিরের বিশ্বাসঘাতকদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন জোটে পাইকারি পরিবর্তন আনার অভিযোগ করেছেন দেশটির সম্ভাব্য নেতা আনোয়ার ইব্রাহীম।
তার সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নাই করে দিতেই এমনটা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।- খবর রয়টার্সের
আনোয়ার ইব্রাহীমই একসময় প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে প্রতিশ্রুতির ওপর ভিত্তি করে সাবেক বৈরী মাহাথিরের সঙ্গে জোট গঠন করা হয়েছে। পরে এই জোটই ২০১৮ সালের নির্বাচনে মালয়েশিয়ায় ছয় দশক ধরে শাসন করা দলটিকে ব্যাপক ব্যবধানে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে।
কিন্তু দেশটির সাবেক শাসক দল সংযুক্ত মালয়স জাতীয় সংস্থার (ইউএমএনও) সদস্যদের সঙ্গে একটি নতুন জোট গঠনে কুয়ালালামপুরের নিকটবর্তী একটি হোটেলে রোববার আলোচনায় বসেন রাজনীতিবিদরা।
পাকাতান হারাপান জোটের কথা উল্লেখ করে আনোয়ার বলেন, আমরা জানি, সেখানে পিএইচ-কে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা করা হয়েছে।
মাহাথিরের নেতৃত্বাধীন এই জোট গঠনে সহায়তা করেছিলেন আনোয়ার ইব্রাহীম। আর মাহাথির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেরসাতু পার্টির।
ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আনোয়ারের অভিযোগ, নতুন জোট গঠনে বেরসাতুতে আমাদের সাবেক মিত্র ও পিকেআরের বিশ্বাসঘাতকদের একটি ছোট্ট অংশকে জড়িত করেছে।
বর্তমানে ক্ষমতাসীন জোটের সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে আনোয়ার ইব্রাহীমের পিকেআর পার্টির। কিন্তু জোটটিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর বিভক্ত এখন চরম পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি মাহাথির বলেন, পরিকল্পিত ক্ষমতা হস্তান্তরে আরও সময় লাগবে এবং নির্দিষ্ট তারিখও তিনি উল্লেখ কতে পারছেন না।
তবে নতুন জোট গঠিত হলে আনোয়ারের হাতে ক্ষমতা না দিয়েই পুরো মেয়াদেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারেন মাহাথির।
একটি সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার একটি বৈঠকে ক্ষমতা হস্তান্তরে পরিষ্কার সময়সীমা উল্লেখ করতে মাহাথিরকে চাপ দিয়েছেন আনোয়ারপন্থী মন্ত্রীরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন নবতিপর এই প্রধানমন্ত্রী।
রোববারে মাহাথিরের বেরসাতু পার্টি একটি বৈঠক করেছে। কিন্তু এতে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা এখনো পরিষ্কার হওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে নতুন জোট গঠন নিয়ে মালয়েশিয়ার নাগরিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সামাজিকমাধ্যমে।
তাদের দাবি, ব্যাপক সংস্কারের জন্যই তারা এই জোটকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু যাদেরকে ক্ষমতা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, তাদের সঙ্গে জোট গঠন করে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে।
ইউএনএমও’র অধীনে মাহাথিরের প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রথম দিকে উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন আনোয়ার ইব্রাহীম। কিন্তু এশীয় অর্থনৈতিক সংকটের সময় অর্থনীতিকে কীভাবে সুরক্ষা করা হবে, তা নিয়ে এই দুই নেতা তখন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন।