দেশে যত সমস্যা তা বিএনপির একার নয় : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুর্নীতির মহামারী, অর্থনীতি ও গণতন্ত্র ধ্বংস, কারাবন্দি খালেদা জিয়াসহ দেশে যত সমস্যা বিদ্যমান তা কিন্তু বিএনপির একার সমস্যা নয়। এটা গোটা জাতির সমস্যা। গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে  বিএনপি আয়োজিত একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ সমস্ত জাতি পরাধীন হয়ে যাচ্ছে, সমস্ত জাতি তাদের অর্জনগুলো হারাচ্ছে। তাই আমাদের সবাইকে উঠে দাঁড়াতে হবে, সোচ্চার হতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে, রাস্তায় নামতে হবে এবং আমাদের সমস্ত অর্জন ফিরিয়ে আনতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে চাই।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা আজকের পত্রিকা খুললে দেখবেন যে বেসিক ব্যাংকের এমডি ১১০ কোটি টাকা দিয়ে বাড়ি কিনেছেন। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে দেখতে পায় না! আর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছে, তা আজকের খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমাদের অর্জনগুলো নস্যাৎ করে দিয়ে এটাকে একটা অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আজকে এটা একটা সম্পূর্ণভাবে নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।’

ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের যে মূল ভিত্তি, সেই ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু যে চেতনার জন্য ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার আন্দোলন হয়েছিল, সেই গণতন্ত্র আজ ৬৮ বছর পরও আমরা অর্জন করতে পারিনি; বরং সেই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আর একদলীয় শাসনব্যবস্থা এবং একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, কে ভোট দিল আর কে দিল না, সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। কত বড় অন্যায় কথা! এ কথার মাধ্যমে গণতন্ত্র কোথায় গিয়েছে? সেটা আমাদের ভেবে দেখতে হবে। আর আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। আমাদের উচিত এর প্রতিবাদ করার। এটা আমাদের ইমানি দায়িত্ব। কিন্তু আমরা পারছি না। আমরা মঞ্চে যারা আছি তারা ব্যর্থ হচ্ছি।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী-খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।