অন্তর্বর্তী সরকারকে অকার্যকর প্রমাণ করতে একটি চক্র গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দীর্ঘ রক্ত ঝরা আন্দোলনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে অকার্যকর প্রমাণ করতে একটি চক্র গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
রিজভী বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার যে প্রত্যাশা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছিল, বাস্তবে তার প্রতিফলন আমরা পাচ্ছি না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি থাকলেও গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে কোনো সুদূরপ্রসারী প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে না।
রিজভীর ভাষ্য, স্বৈরাচার পতনের পরও আওয়ামী লীগের সহযোগী খুনের আসামিরা আজও আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার দাবি করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসনের জন্য যারা দায়ী, তারা এখন প্রকাশ্যে আদালতে দাঁড়িয়ে হুমকি দিচ্ছে, আদালত ও পুলিশ প্রশাসনকে কটাক্ষ করছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারতে পলাতক শেখ হাসিনা একের পর এক হুংকার দিয়ে যাচ্ছেন, আর তার অনুসারীরা আদালতকে অকার্যকর প্রমাণের চেষ্টা করছে। গত ১৫ বছরে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এখন ফ্যাসিস্ট অপরাধীরা আদালতে আরামদায়ক পরিবেশে হাজির হচ্ছেন।
বিএনপির এ নেতা অভিযোগ করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের নীরবতা প্রমাণ করে প্রশাসনের ভেতরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা সক্রিয়। প্রশাসনের কিছু অংশ এখনো শেখ হাসিনার ‘অলিগার্কদের’ দ্বারা প্রভাবিত।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা ও অন্যান্য জায়গায় পলাতক ফ্যাসিস্টরা ঝটিকা মিছিল করছে, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করছে, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে। শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের মানিকগঞ্জের বাড়ি পর্যন্ত আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব অপকর্মে প্রশাসনের নীরবতা অশনিসংকেত।
রিজভীর অভিযোগ, দেশে এক ধরনের মাফিয়া অর্থনীতি গড়ে উঠেছে, যা শেখ হাসিনার পাচার করা টাকাকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হচ্ছে। টাকার জোরে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ফায়দা লুটতে চায় তারা।
তিনি বলেন, টাকায় কথা কয়, এই প্রবাদের সফল ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদের চক্র দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে। তারা এখনো দেশে এবং প্রবাসে নানান ষড়যন্ত্রে সক্রিয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা এখনো বহাল তবিয়তে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বরং মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে প্রশাসনের কিছু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে এখনো তারা স্বপদে বহাল আছেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, বাজারে চাল-ডাল, তেল-ডিমে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে আছে আওয়ামী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটই দেশে মুদ্রাস্ফীতি ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম প্রমুখ।