কাশ্মির নিয়ে কী করবে জাতিসঙ্ঘ
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস কাশ্মির সঙ্কট নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি পাকিস্তান সফরে এসে এই প্রস্তাব দেন। পাকিস্তান তার এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও ভারত তা নাকচ করে দিয়েছে।
ভূস্বর্গ কাশ্মির এখন বিরামভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভারতের মোদি সরকার একতরফাভাবে কাশ্মির প্রশ্নে ভারতীয় সংবিধানে দেয়া বিশেষ মর্যাদা ও রক্ষাকবচ বাতিল করার পর সেখানে কার্ফু জারি, নেতাদের আটক, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক।
কাশ্মির এখন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ঘন ঘন শিরোনাম হচ্ছে। সর্বশেষ জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস কাশ্মির নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এই অঞ্চলে অসন্তোষ নিয়ে কাজ করার সময় ভারতকে মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দু’দেশ সম্মত হলে কাশ্মির সঙ্কট নিরসনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। ভারত অবশ্য জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের এই বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছে। অপরদিকে, গত সোমবার একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গুতেরেসের মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং কাশ্মির ইস্যুতে মধ্যস্থতার জন্য জাতিসঙ্ঘকে আরো বেশি কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্প্রতি মুসলিম বিশ্বের অন্যতম নেতা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানও কাশ্মির নিয়ে কথা বলেছেন। কয়েক দিন আগে পাকিস্তান সফরে এসে এরদোগান পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন, কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে থাকবে তার দেশ। গত শুক্রবার পার্লামেন্টে এই ভাষণ দেন। তিনি বলেন, কাশ্মিরে আমাদের ভাই-বোনরা কয়েক দশক ধরে চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে একতরফা পদক্ষেপের কারণে সে দুর্ভোগ অনেক বেড়েছে। কাশ্মির সমস্যার সমাধান হতে হবে সহিংসতা নয়, ন্যায়বিচারের মাধ্যমে।
ভারত কাশ্মিরকে দ্বিপাক্ষিক ইস্যু বললেও জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব ছাড়াও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাশ্মির নিয়ে কয়েকবার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী কাশ্মির সঙ্কট নিরসনের প্রস্তাব পাস হয়েছিল। পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, জাতিসঙ্ঘই এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে নতুন করে উদ্যোগ নিতে পারে। তাই পর্যবেক্ষক মহল জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের মধ্যস্থতার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে এবং জাতিসঙ্ঘকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।