নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই, নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আমাদের গণতন্ত্রে যেতে হবে: ফখরুল
নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই, নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আমাদের গণতন্ত্রে যেতে হবে জানিয়ে ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত বাকশালের ঘটনা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদেরকে বারবার বলতে হবে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করতো না। আওয়ামী লীগ বারবার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। সুতরাং, আওয়ামী লীগকে আর কোন গণতন্ত্রের সুবিধা দেওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি না।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানী রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২৫ মার্চের এই কালো দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই দেশের মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। হত্যা করেছে লাখো নিরীহ মানুষকে। কিন্তু পাকিস্তান এখনও ক্ষমা চায়নি। এ কথা বলছি এ কারণে, একটি গোষ্ঠী এই বিষয় আমলে নিচ্ছে না। তারা বলেছ, ৭১ কোন ঘটনা না। তারা বরং পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছে। তাদের নাম বলতে চাই না। এখন তারা আবার গলা ফুলিয়ে কথা বলার চেষ্টা করছে। ইতিহাস তো ইতিহাস। এটা যেন আমরা ভুলে না যাই।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। এটাই এদের চরিত্র। ওরা দেখে, জনগণ যখন ক্ষেপে উঠে, তখন ওরা এভাবে কর্মীদের অরক্ষিত রেখে পালিয়ে যায়। এবার তাই করেছে, জনতার ক্ষোভে ভারতে পালিয়ে গেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার প্রথম শুরু হয়েছে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে, পরে করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। দেশের মৌলিক সংস্কার কিন্তু বিএনপির হাতে দিয়েই হয়েছে। এখন ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের প্রস্তাব দিয়েছে তো বিএনপি, ১৬ সালে বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০৩০ ভীষন দিয়েছে। সংস্কার কোন নতুন বিষয় নয়। অথচ অন্তর্বতী সরকার সংস্কারের পাহাড় এনেছে। আমরা সংস্কারের প্রস্তাবনায় মতামত দিয়েছি, পক্ষে – বিপক্ষে। আমরা বলেছি, নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। এটি নিয়ে আজ ষড়যন্ত্র সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কুতুবের আবির্ভাব হয়েছে। তারা যে বাংলাদেশকে কোথায় নিতে চায় আমাদের জানা নেই। দেশের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। যেটা আমরা মেনে নেব না। কারণ সেনাবাহিনী দুঃসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, আন্দোলনের ভিত্তি তো বিএনপি করেছে। হঠাৎ করেই একটা বিপ্লব হয়নি, বিএনপির নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মধ্যে উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি খারাপ কাজ করে এমন কথা যেন না শুনতে হয়। এতে সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাবে। আগামীর বাংলাদেশ আপনাদের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্বাস করি, ওরা গাড়ি বহর নিয়ে যা করুক, সমস্যা নেই। আমরা জানি ওরা কি করতে পারবে। আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ।
ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে, অতীতে ছিলো, থাকবে। বিএনপি অবশ্যই জয়যুক্ত হবে ইনশাল্লাহ। আমাদের নেতা তারেক রহমান (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) বার বার নির্দেশ দিয়েছেন যে, আপনাদের সঠিকভাবে ও সুন্দরভাবে চলতে। জনগণ যাতে আপনাদের ভালোবাসে সেই কাজগুলো করতে থাকুন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই, কারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আমাদের গণতন্ত্রে যেতে হবে…। ডেমোক্রেসি ছাড়া আমরা মনে করি না যে আর কোনো সিস্টেম আছে, যে সিস্টেম জনগণের কল্যাণ করতে পারে। আজকে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, যাতে এই প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়, বিলম্বিত হয়। অন্য কারো সাহায্য করা যায় এবং দেশে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায় সেই কাজগুলো শুরু হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয় লক্ষ করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু নতুন নতুন কুতুব আবির্ভূত হয়েছে। তারা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চায় আমি জানি না। তাদের ভাষা, বাক্য, বক্তব্য সম্পূর্ণ বাংলাদেশকে একটি নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যেতে চায়। তারা গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যেতে চায় না।’ এ সময় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।