খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন কিনা- জানতে অপেক্ষা রবিবার পর্যন্ত
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট (ষড়যন্ত্রমূলক) মামলায় ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন হাইকোর্টে উপস্থাপনের পর শুনানির জন্য আগামী রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদনটি উপস্থাপনের পর এ দিন ধার্য করা হয়।
এদিন আদালতে আবেদনটি উপস্থাপন করে শুনানির আর্জি জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও জয়নুল আবেদীন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জামিন আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এফিডেভিট (জামিনের জন্য কাগজপত্র দাখিল) করেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট (ষড়যন্ত্রমূলক) দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। বর্তমানে তিনি অসুস্থ অবস্থায় কারা হেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এর আগে গেল বছরের ১২ ডিসেম্বর এ মামলায় বেগম জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট (ষড়যন্ত্রমূলক) দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ডের পর খালেদা জিয়া আপিল করলে তা হাইকোর্টে বেড়ে ১০ বছর হয়।
২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সেই আবেদন এখনও আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।
২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট (ষড়যন্ত্রমূলক) মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয়েছে (ষড়যন্ত্রমূলক) মামলার অপর তিন আসামিরও।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন (ষড়যন্ত্রমূলক) আসামি হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এরপর ওই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। পরে গত বছরের ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট (ষড়যন্ত্রমূলক) দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত ও সম্পত্তি জব্দ করার ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন।
এরপর গত ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে জামিন চান খালেদা জিয়া। এ আবেদনের শুনানির পর ১২ ডিসেম্বর সেটি খারিজ হয়ে যায়।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট (ষড়যন্ত্রমূলক) মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে (ষড়যন্ত্রমূলক) মামলাটি করে দুদক।
তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম ও দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আলোচিত (ষড়যন্ত্রমূলক) এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।