জীবননগরে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত ছাত্রদল নেতা সুমন অবশেষে মারা গেছেন
দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা ছাত্রদলের নেতা সুমন (৩৫) অবশেষে মারা গেছেন। অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের হামলায় মারাত্মক আহত হয়ে এক বছর ধরে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মঙ্গলবার সকালে পুলিশ নিহত সুমনের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা মর্গে পাঠিয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের শরিফউদ্দিনের একমাত্র পুত্র সুমন ২০১৯ সালের ২ ফেব্র“য়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে দর্শনা থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। উপজেলার উথলী গ্রামের হায়রা বটতলা নামক স্থানে পৌঁছালে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা তাকে ওই রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পথচারিরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনার পর থেকে সুমন অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন।
নিহত সুমনের মামা ফারুক হোসেন বলেন, আমার ভাগ্নে সুমন জীবননগর উপজেলা ছাত্রদলের অঘোষিত কমিটির সম্ভাব্য সভাপতি ছিল। ২০১৯ সালের ২ ফেব্র“য়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিল। ওই সময় জীবননগর উপজেলার উথলী হায়রা বটতলায় পৌঁছা মাত্র অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে রাস্তায় আটকিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম করে। দুর্বৃত্তদের হামলায় আমার ভাগ্নে সুমন অজ্ঞান হয়ে ঘটনাস্থলে পড়েছিল। পথচারিরা তাকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করার পর আমরা সে খবর জানতে পারি। সেই থেকে আমার ভাগ্নে অচেতন ছিল।
তিনি আরো জানান, সুমনকে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের নামীদামি চিকিৎসকের নিকট নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। সর্বশেষ তাকে ভারতে ব্যাঙ্গালোরে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু কোথায়ও তাকে সুস্থ করা যায়নি। আমাদের ধারণা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কিংবা তার সাথে যাদের আর্থিক লেনদেন রয়েছে তারাই হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে।
তিনি জানান, চিকিৎসার এক বছরের মাথায় মারা যায় সুমন। সুমনের পরিবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় ঘটনার আট মাস পর মামলা করা হয়। মামলায় রিপন নামের এক যুবককে প্রধান আসামি করে মামলা দেয়া হয়। ঘটনার পর আমরা প্রশাসনিকভাবে খুব বেশি সহযোগিতা পাইনি। মামলায় রিপনসহ সকল আসামি জামিনে রয়েছে। আমার ভাগ্নেকে প্রতিপক্ষরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এদিকে, সুমনের বাবা-মা তাদের একমাত্র পুত্রসন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
সুমনের বাবা শরিফ উদ্দিন বলেন, সন্তানকে সুস্থ করতে আমি সব ধরনের চেষ্টা করেছি। আমি এখন সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছি। ছেলের হত্যার সাথে জড়িতদের আমি শাস্তি চাই।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার আট মাস পরে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দেয়। ওই মামলার সকল আসামিরা জামিনে আছে। মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর তদন্ত শেষে ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে তদন্ত অব্যাহত আছে।