‘ব্যাংক লুটপাট এখন উন্নয়নের অংশ হয়ে গেছে’
দেশ থেকে কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। অদৃশ্য কারণে পাচার করা অর্থ ফেরতের উদ্যোগও বন্ধ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নের্তৃবৃন্দ। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট-উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তারা।
এতে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন বাম জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংকট উত্তরণে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন বক্তারা।
আলোচনায় অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ফারমার্স ব্যাংক রক্ষা করতে রাষ্ট্রাত্ত খাতের ব্যাংকগুলোকে দিয়ে শেয়ার কেনানো হয়েছে। এভাবে সব ক্ষেত্রে কার্পেটের নিচে ময়লা লুকিয়ে ফেলা হচ্ছে, যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। দেশে খেলাপি ঋণ কত, তা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল স্পষ্ট করে দেখিয়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা।
রেটিং প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মোজাফফর আহমেদ বলেন, ‘রেটিং করায় আমরা ব্যাংকগুলোর ভেতরের খবর জানি।
ব্যাংকগুলোয় করপোরেট গভর্নেন্স বলতে কিছু নেই। চেয়ারম্যানরাই ব্যাংক পরিচালনা করে। এর ফলে ৫ শতাংশ মূলধন দিয়ে তারা পুরো ব্যাংক পরিচালনা করছে। আমি মনে করি, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ৪০ শতাংশ।’ আলাদা কোম্পানি গঠন করে খেলাপি ঋণ আদায়ের উদ্যোগ সফল হবে না বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমাদের অর্থমন্ত্রী এক নম্বর হয়েছেন। এর পরদিন দেখলেন পরিস্থিতি খারাপ। সারা বিশ্বে মন্দার ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আমদের অর্থনীতির সব সূচক খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনীতি ধসে যাওয়ার উপক্রম। যারা এমন পরিস্থিতিতেও অর্থনীতিকে ভালো বলছেন, তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। তাদের বিচার দাবি করছি। কিছু মানুষের লুটপাটের চাপ সব আমানতকারী কেন নেবে?
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংক যদি তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করে, তাহলে কি তাদের পদ টিকে থাকবে? ব্যাংক লুটপাট, ব্যাংক দখল, পরিবেশ ধ্বংস এখন উন্নয়নের অংশ হয়ে গেছে।