আজ থেকে স্বাভাবিক লেনদেন সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সার্ভার আপগ্রেডেশনের কাজ চলায় প্রায় চার দিন বন্ধ ছিল সব ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি। এ সম্পর্কিত কোনো তথ্যও পাচ্ছিলেন গ্রাহকরা। ফলে তারা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে আজ থেকে বেচাকেনা স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছেন জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অনেক গ্রাহক এসেছেন সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য। কিন্তু কিনতে না পেরে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। হেল্পডেস্ক থেকে ফরম পূরণে সহায়তা করা হলেও সার্ভার চালুর বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানানো হয় গ্রাহকদের। তবে অধিদপ্তর বলছে, সার্ভার আপগ্রেডেশনের কাজ চলমান। এতে সাময়িক বন্ধ ছিল বিক্রি। তবে আজ (মঙ্গলবার) থেকে আবারও আগের মতোই সেবা পাবেন গ্রাহকরা।
শাহ আলম নামে একজন গ্রাহক বলেন, আমি আগে থেকে কোনো বার্তা পাইনি। পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য দুদিন ধরে ঘুরছি। কবে নাগাদ সার্ভার ঠিক হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্যও পাচ্ছি না। ব্যাংকের গ্রাহককে মোবাইলে এসএমএস করে সবকিছু জানিয়ে দেওয়া হয় কিন্তু অধিদপ্তর জানায়নি। রোববারের মতো সোমবারও ঘুরছি।
সাবেহা সুলতানা এসেছেন ফরম নিতে। তিনি বলেন, মেয়ে ও ছেলের বউয়ের নামে কিছু সঞ্চয়পত্র ক্রয় করব। গত বৃহস্পতিবার এসেছিলাম। বলেছিল সার্ভার ডাউন। আজও এলাম, বলে সার্ভার ডাউন। কবে সার্ভার ঠিক হবে এটা জানাতে পারছেন না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আমরাও আশা নিয়ে এসেছি সার্ভার ঠিক হবে বলে।
বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসের এক অতিরিক্ত পরিচালক জানান, গত বুধবার থেকে সার্ভার ডাউন আছে। কবে ঠিক হবে, আমরা এ বিষয়ে কোনো কিছু জানি না। সার্ভার ঠিক হলে সবাই সেবা পাবেন। তবে সার্ভার ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ফরম নিতে পারছেন, তবে জমা হচ্ছে না। কেউ চাইলে কাউন্টারে রেখে দিতে পারেন, সার্ভার ঠিক হলে জমা করে নেব। সার্ভার ঠিক হওয়া অধিদপ্তরের কাজ। সমস্যাটা অধিদপ্তরের, বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়।
এ বিষয়ে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও জনসংযোগ) এবং উপসচিব মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, সার্ভার আপগ্রেডেশনের কাজ বৃহস্পতিবার থেকে চলছে। কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন আর অসুবিধা হবে না। এদিকে চলতি মাস থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বাড়ছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত সঞ্চয় কর্মসূচিগুলোর (স্কিমের ধরন অনুযায়ী) মুনাফার হার বেড়ে হচ্ছে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থ বিভাগ ৮ জানুয়ারি বর্ধিত হার নির্ধারণের আদেশ জারি করতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে (আইআরডি) অনুরোধ করে। অর্থ বিভাগের এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদষ্টো ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মুনাফার এ হার ১২ দশমিক ২৫ থেকে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থাৎ বর্ধিত হারের কারণে কোনো সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১২ শতাংশের কম হবে না। সবচেয়ে কম মুনাফা (১২.২৫ শতাংশ) পাওয়া যাবে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের বিপরীতে। সবচেয়ে বেশি মুনাফা (১২.৫৫ শতাংশ) পাওয়া যাবে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে। সুদহার পরিবর্তনের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের ধাপেও পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে এ সংক্রান্ত চিঠিতে। বর্তমানে ১৫ লাখ টাকা; ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা এবং ৩০ লাখ ১ টাকার বেশি, এই তিন ধাপ রয়েছে। প্রতিটি ধাপে আলাদা মুনাফার হার নির্ধারিত। তবে নতুন নিয়মে দুটি ধাপের কথা বলা হয়েছে। একটি ধাপে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারীরা। আর অপর ধাপে এর ওপরের বিনিয়োগকারীরা থাকবেন।
-যুগান্তর