শাকিবের কারিশমা
দীর্ঘদিন ধরেই দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চেহারা বেশ মলিন। হিট, সুপারহিট শব্দগুলো যেন সিনেমার বাজার থেকে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই সঙ্গে সিনেমা ব্যবসায় লস করে অনেক পেশাদার প্রযোজক বিদায় নিয়েছেন। তবে এতকিছুর মধ্যেও ঢালিউডের শীর্ষ তারকা শাকিব খান থেমে নেই। নিজেই ইন্ডাস্ট্রির হাল ধরেছেন। সেরা নায়কের পাশাপাশি হয়েছেন প্রযোজক। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস থেকে প্রথম প্রযোজিত সিনেমা ‘হিরো দ্য সুপারস্টার’র পর গত বছর তার প্রযোজনায় ‘পাসওয়ার্ড’ মুক্তি পায়। সেটাও গত বছরের ব্যবসায়িক সফলতা পায়।
বলতে গেলে গত বছর এই একটা সিনেমা ঘিরেই ছিল সব আলোচনা। এখানেও সফল হন শাকিব খান। আর এবার নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় সিনেমা ‘বীর’ নিয়ে নতুন বছরের শুরুতে হাজির হয়েছেন তিনি। গুণী নির্মাতা কাজী হায়াত পরিচালিত এ ছবিতে ভিন্ন লুকে, গেটআপে দর্শকরা শাকিবকে পেয়েছেন। তার মুখভর্তি দাড়িগোঁফ, চেহারার মধ্যে চকচকে বিষয় না এনে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কথা বলা চরিত্র, গান ও অ্যাকশনে ভিন্ন এক কারিশমা দেখিয়েছেন শাকিব। সিনেমার মন্দা এই বাজারে ছবিটি এখন পর্যন্ত ভালো ব্যবসা করছে। মুক্তির পর বেশ কয়েকটি শো ‘হাউজফুল’-এর সুবাস পেয়েছে। শুক্রবার ছবিটি দেশের ৮০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এটি মুক্তি পাওয়ার পর দেশের প্রায় সব সিনেমা হলের শোগুলোতে ছিল দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলে ‘বীর’ সিনেমা দেখার জন্য দর্শকের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিকে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স, বলাকা, টঙ্গীর চম্পাকলি, সাভারের সেনা অডিটোরিয়াম, গাজীপুরের বর্ষা, রংপুরের শাপলা ও যশোরের মণিহার হলে সিনেমাটি দর্শকরা আগ্রহ নিয়ে উপভোগ করছেন। বলাকা সিনেমা হলের ম্যানেজার এস এম শাহীন বলেন, আমাদের সিনেমা হলে শুধু না, বাংলাদেশের প্রতিটি সিনেমা হলে খবর নিয়ে জানা গেছে, ‘বীর’ ছবিটির সেল খুব ভালো যাচ্ছে। কয়েকটি শো হাউজফুল গেছে। এটা চলচ্চিত্রের মানুষ হিসেবে আমার কাছে সত্যিই আনন্দের সংবাদ। দর্শকরা অনেকদিন পর ভালো মানের একটি সিনেমা পেয়েছে এবং তা দেখার জন্য হলে আসছে বলেও জানান তিনি। স্টার সিনেপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এখানে গত কয়েকদিন ‘বীর’-এর রেজাল্ট ছিল খুবই ভালো। চারটি করে শো চলছে এবং সীমান্ত সম্ভারে চলছে ‘বীর’-এর দুটি শো। দিনের মধ্যে বিকাল ও সন্ধ্যার শো হাউজফুল যাচ্ছে তাদের। অনেক দর্শক অগ্রিম টিকিট কাটছে। সিরাজগঞ্জের চালা সিনেমা হলেও ছবিটি ভালো চলছে বলে জানা যায়। মধুমিতা সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ঈদ ছাড়া শাকিবের ‘বীর’ দিয়ে প্রথম দিনই শো হাউজফুল গেল। শাকিবের ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ ছবির চেয়ে অনেক ভালো সেল পাচ্ছে ‘বীর’। এর গল্প, শাকিবের অভিনয় ও কাজী হায়াত সাহেবের মেকিং দর্শকরা বেশ পছন্দ করছেন। এভাবে তিন-চারদিন কয়েক শো ‘হাউজফুল’ চলতে থাকলে ছবিটি সুপারহিটের তালিকায় জায়গা করে নিবে। ‘বীর’ ছবিটি সহ-প্রযোজনা করেছেন এমডি ইকবাল। তিনি বলেন, সারা দেশের সিনেমাহলগুলোর সেল রিপোর্ট ভালো পাচ্ছি। সিনেমা হল মালিকরাও শাকিবের ‘বীর’ ছবিটি পেয়ে বেশ খুশি। আশা করছি, ছবিটি রেকর্ডের খাতায় জায়গা করে নিবে এ বছর। শাকিব খান বেশ কয়েকটি সিনেমা হলে ছবিটির শো দেখে ও দর্শক রেসপন্স পেয়ে বেশ আনন্দিত। তিনি বলেন, ‘বীর’-এর সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ছবির গল্প। পরিচালক কাজী হায়াতের আলাদা একটা স্টাইল আছে। এই স্টাইল দেশের বেশির ভাগ মানুষের বেশ পছন্দের। আর বছরের শুরু থেকে সিনেমা হল মালিকরা
ব্যবসায়িকভাবে খরায় ছিলেন। সেই ভাবনাও কাজ করেছে। ছবিটি দর্শকরা পছন্দ করছে জেনে আমারও ভালো লাগছে। সামনে আরো ভালো সিনেমা দর্শকদের উপহার দিতে চাই। শাকিব খান, বুবলী ছাড়াও ‘বীর’ ছবিতে আরো বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর, নাদিম, জাদু আজাদ, শিশু শিল্পী সুনান প্রমুখ।