প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে চলমান সম্পর্কে অচলাবস্থা নিরসনের আশা আশা পররাষ্ট্র উপদেষ্টার
প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে চলমান সম্পর্কে অচলাবস্থা নিরসনের আশা করছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত যদি আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নিতে পারতো তাহলে তাদেরও সুবিধা হতো আমাদের সুবিধা হতো কিন্তু সেটা দুঃখজনকভাবে হচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান খুবই ভালো কিন্তু গত দুই-তিন মাসে যে ব্যবসায়িক মন্দা যাচ্ছে সেটা কি শুধু বাংলাদেশকে ইফেক্ট করছে!
তিনি বলেন, এই অবস্থা শুধু বাংলাদেশকে ইফেক্ট করছে না, ভারতকেও ইফেক্ট করছে। পরিমাণটা এত বেশি না তবে ইফেক্ট কিন্তু পড়ছে। কলকাতার অর্থনীতি পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করি এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারবো। অচল অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো যোগাযোগ স্থাপন। আগামীকাল ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসছেন আমাদের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করতে। এটা স্ট্যান্ডিং মেকানিজম অস্বাভাবিক কিছু না। প্রতি বছর আমাদের একজন যান ওপাশে পরের বছর ওপাশ থেকে একজন আসেন। এটাকে কনসাল্টেশন বলা হয়। এটা দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে। আমি আশা করব তারা একটা ফলপ্রসূ আলোচনা করবেন।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ৪০তম সার্ক চার্টার দিবস উপলক্ষে সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) আয়োজিত ‘দ্য সার্ক- পিপল অব সাউথ এশিয়ে ক্রেভ ফর’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি এর আগেও বলেছি, কোনো সমস্যার সমাধান করতে হলে আগে স্বীকার করতে হবে যে সমস্যা আছে। আমাদের এটিও স্বীকার করতে হবে যে পাঁচ আগস্টের আগে এবং পরে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের একটি গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়ে আমাদের চেষ্টা করতে হবে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে। সে হিসেবে আমি প্রস্তাব করেছিলাম যে আমাদের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কনসালটেশন আছে সেটি শুরু করবো।
উপদেষ্টা বলেন, সার্ক শক্তিশালী হোক এ বিষয়ে প্রফেসর ড. ইউনূস অত্যন্ত পজিটিভ এবং আমরা আবার আঞ্চলিকভাবে একটি স্বাভাবিক সম্পর্কে ফিরে যাই। এটা হচ্ছে না, এটা আমাদের শুরু করতে হবে। শুরু করলে একবার আমরা সবকিছু করে ফেলতে পারবো, সেটি চিন্তা না করাই ভালো।
তিনি বলেন, দেশের সরকার অস্থায়ী হতে পারে কিন্তু দেশ ও স্বার্থ স্থায়ী। আমি নিশ্চিত যে স্বাভাবিকভাবে সার্ক নিয়ে একটি পজিটিভ মনোভাব মানুষের মধ্যে আছে। সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক শুরু হোক যেটি গত ১০ বছরে হয়নি, তারপর আমরা চেষ্টা করব কীভাবে একটি সাবমিতে রূপান্তরিত করা যায়।
আঞ্চলিক দারিদ্র্য দূরীকরণে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমরা যদি পরস্পরকে সহযোগিতা করি তাহলে এই অঞ্চলের দারিদ্র্য দূর করা যাবে। দারিদ্র্য থেকে সবাইকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। আমরা কিছুটা সাফল্য অর্জন করিনি তা কিন্তু না, আরও কিছুটা পথ পাড়ি দিতে হবে সেজন্য সবার সহযোগিতা লাগবে। সার্ককে আমাদের কর্মক্ষমতা পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে সার্ক জার্নালিস্ট ফোরামের (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) সভাপতি নাসির আল মামুনের সভাপতিত্বে, সেমিনার অর্গানাইজিং কমিটির কনভেইনার রফিকুল ইসলাম আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আওয়াল মিন্টু, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।