মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কাকে সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র তিন দিন বাকি। তবে তুরস্ক এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্বে এবং আঙ্কারায় নেতৃত্ব ভাগ হয়ে গেছে কাকে সমর্থন করবে তা নিয়ে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের ঘনিষ্ঠ কিছু মহল ট্রাম্পের পক্ষে, আবার কমলা হ্যারিসের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখার পক্ষে অন্যরা।
আঙ্কারার কর্মকর্তারা মনে করছেন, উভয় প্রার্থীর বিজয়ই তুরস্কের বৈদেশিক নীতি এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের প্রচারাভিযান চলাকালে তুরস্কের কর্মকর্তারা অস্বাভাবিকভাবে নিরব থেকেছেন এবং কোনো প্রার্থীর পক্ষেই সুনির্দিষ্ট মতামত দেননি।
গত এপ্রিলে পেনসিলভেনিয়ায় ট্রাম্পের সমাবেশে হামলার পর এরদোগান শুধু ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ফোন কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিলেন। তবে সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তুরস্কের প্রতিনিধি কৌশলগতভাবে কেবল পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং হ্যারিস বা ট্রাম্পের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক চায়নি।
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক
এরদোগানের অনুসারীদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার পূর্ববর্তী সম্পর্কের ফলে ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হলে তুরস্কের জন্য ভালো হবে। কারণ এরদোগান ও ট্রাম্প পূর্বে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার আলাপ-আলোচনা করেছেন।
২০১৯ সালের একটি ফোন কলে ট্রাম্প এরদোগানকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সামরিক অভিযান চালানোর সবুজ সংকেতও দিয়েছিলেন।
যদিও তুরস্কের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কিছু কর্মকর্তা মনে করেন, ট্রাম্পের শাসনামলে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা কঠিন ছিল। তাদের মতে, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একটি স্থিতিশীল সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি।
কমলা হ্যারিস প্রশাসনের সম্ভাবনা
এদিকে তুরস্কের অন্যকিছু কর্মকর্তা মনে করেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রশাসন ক্ষমতায় আসলে উভয় পক্ষের সম্পর্ক তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল হতে পারে।
হ্যারিসের বর্তমান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ফিলিপ গর্ডন তুরস্ক সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখেন এবং তুরস্কের সঙ্গে কাজের ব্যাপারে অভিজ্ঞ। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক একটি সুষ্ঠু ও সমন্বিত নীতির মাধ্যমে এগোতে পারে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ
তুরস্কের নেতৃত্ব মনে করে, এবারের মার্কিন নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের জয় হলে বর্তমানের স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব হতে পারে। যা পরবর্তী প্রজন্মের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রিসহ সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে পারে।
তুরস্কের কর্মকর্তারা বুঝতে পেরেছেন যে, এবারের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল খুবই অনিশ্চিত। তাই তারা এই নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকছেন এবং কোনো প্রার্থীর পক্ষেই সরাসরি অবস্থান নিচ্ছেন না।
সূত্র: মিডল ইস্ট আই