কুমিল্লায় অমতে বিয়ের অভিযোগ এনে ভিডিও কলে প্রেমিক যুগলের আত্মহত্যা

0

অমতে বিয়ের অভিযোগ এনে চিরকুট লিখে স্বামীর বাড়িতে ভিডিও কলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রেমিক-প্রেমিকা।

কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেতুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ স্বামীর বাড়ি থেকে নববধূর ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে। এসময় মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ। চিরকুটে নিজের অমতে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন আত্মহননকারী।

গৃহবধূ খাদিজা আক্তার ঊর্মি (১৭) কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামের জামাল হোসেনের মেয়ে। সে চৌয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। ভিডিওকলে যুক্ত থাকা অপর আত্মহননকারী ওমান প্রবাসী সাফায়েত হোসেন (২৩)। তিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বেতুয়া (কৃষ্ণপুর) গ্রামের রং মিস্ত্রি আরিফুর রহমানের সঙ্গে খাদিজার বিয়ে হয়। বাল্যবিয়ে হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয়ে ঘরোয়াভাবে গোপনে বিয়ের আয়োজন করা হয়।

পুলিশের উদ্ধার করা চিরকুটে ঊর্মি লিখেন, চাইছিলাম দুজনে একসাথে বেঁচে থাকতে। বাঁচতে দিল না, আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। ও বেঁচে থাকলেও তোমরা ওকে খুন করতে এবং ওর ফ্যামিলিকে জেলের ভাত খাওয়াইতে। তাই নিজেও দুনিয়া ছাড়লাম, ওরেও আমার সাথে নিয়ে গেলাম। আপনাদের কাছে একটা শেষ ইচ্ছা। বাবা-মা, ভাই বোনের কাছে একটা আবদার, দুনিয়াতে যেহেতু থাকতে দেয় নাই আমাদের দাফনটা যেন একসাথে হয়। একদিন আগে পরে হলেও একই কবরস্থানে যেন দাফন করে।

ঊর্মির মা নুরুন্নাহার জানান, গত ১৪ অক্টোবর (সোমবার) আমাদের আত্মীয় বেতুয়ার আরিফুর রহমানের সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দেই। বিয়ের পর মেয়ে স্বামীর বাড়িতে হাসি-খুশিতেই ছিল। শনিবার রাতে হঠাৎ শুনি ঊর্মি ও তার প্রেমিক সাফায়েত ভিডিও কলে আত্মহত্যা করেছে।

প্রবাসী সাফায়াতের বাবা আবদুল খালেক বলেন, এক বছর আগে ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে ছেলে হঠাৎ বিদেশে কর্মস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে শুনলাম ফেসবুকে আমার ছেলের সঙ্গে ঊর্মি নামে এক মেয়ের পরিচয় হয়েছিল। হঠাৎ মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সেই মেয়ে চিরকুট লিখে আমার ছেলের সঙ্গে ভিডিও কলে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।

সোমবার লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, কদিন আগেই মেয়েটির বিয়ে হয়েছে। প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে সে আত্মহত্যা করেছে। ওদিকে প্রবাসী প্রেমিকও একইভাবে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার রাত ১১টায় আমরা নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করি। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। মরদেহের পাশে হাতে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যার আগে মেয়েটি তার মা-বাবার উদ্দেশ্যে এটি লিখেছিল।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com