তাদের ভালোবাসার গল্প
ভালোবাসা। দু’টি মন একই সুতোয় গাঁথতে পারলেই যেন নিখাদ ভালোবাসার জন্ম হয়। এমন ভালোবাসার মধুর গল্প রয়েছে আমাদের শোবিজ তারকাদেরও। আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ক’জন তারকার সেসব ভালোবাসার গল্পই তুলে ধরা হলো
ওমর সানি-মৌসুমী: ঢাকাই চলচিত্রের জনপ্রিয় তারকা দম্পতি ওমর সানি ও মৌসুমী। নব্বই দশকে চলচ্চিত্রে নাম লেখান খুলনার মেয়ে মৌসুমী। প্রথমে প্রয়াত সালমান শাহ্’র সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় শুরু করেন। পরে ওমর সানির সঙ্গে তার জুটি দর্শক ব্যাপকভাবে গ্রহণ করে। আর একসঙ্গে অভিনয় করতে গিয়েই একে অপরের ভালো বন্ধু বনে যান।
সেই বন্ধুত্ব যে কখন ভালোবাসায় পরিণত হয় তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারেননি। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে বিয়ের পর্বটা সেরে ফেলেন তারা। তাদের ভালোবাসার ঘরে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে।
তৌকীর আহমেদ-বিপাশা হায়াত: বিপাশা হায়াত তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদে পড়েন। আঁকাআঁকি এবং ক্যানভাস নিয়েই তার ব্যস্ততা। আর তৌকীর আহমেদ তখন বুয়েটে পড়াশুনা করতেন। ঢাকার মঞ্চে চুটিয়ে অভিনয় করছিলেন এ অভিনেতা। একদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এক বন্ধুর আমন্ত্রণে তিনি বেড়াতে আসেন। আর সেখানেই বিপাশার ছবি আঁকা দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। সেদিন থেকেই বিপাশার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর কয়েকবার দেখা হলেও পাকাপোক্তভাবে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয় ‘রূপনগর’ নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে। ভালোলাগা থেকে শুরু হয় ভালোবাসা। একদিন লেকের ধার দিয়ে হাঁটার সময় তৌকীর তার ভালোবাসার কথা জানান বিপাশাকে। যদিও বিপাশা মনে মনে তৌকীরকে খুব পছন্দ করতেন। এভাবেই ভালোবাসা শুরু তাদের। ১৯৯৯ সালের ২০শে জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর সমান তালে অভিনয় করেছেন সফল এ তারকা জুটি। দুই সন্তান নিয়ে সুখের সংসার বিপাশা-তৌকীর দম্পতির।
জাহিদ হাসান-সাদিয়া ইসলাম মৌ: জাহিদ হাসান ও সাদিয়া ইসলাম মৌ একে অন্যের কাজ খুব পছন্দ করতেন। এই পছন্দ থেকেই দু’জনের মধ্যে ভালোলাগা তৈরি হয়। তবে কখনোই একসঙ্গে কাজ করা হয়নি তাদের। অবশেষে একবার বিটিভি’র জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে দু’জনে একসঙ্গে পারফর্ম করেন। অনুষ্ঠানটি প্রচারের পর আলোচিত হন জাহিদ হাসান ও মৌ জুটি। এরপর নানা অনুষ্ঠানে তাদের একসঙ্গে দেখা হতো। একসঙ্গে ওঠা-বসা করতে করতে একে-অন্যের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয় একটা সময়। সেই ভালোবাসা রূপ নেয় সুখের সংসারে। আজ সেই সংসারে রয়েছে দুই সন্তান।
রিয়াজ-তিনা: চিত্রনায়ক রিয়াজ ও মডেল তিনার পরিচয় সূত্র হিসেবে কাজ করেছে ‘হৃদয়ের কথা’ সিনেমাটি। এই সিনেমায় একটি গানের নাচের দৃশ্যে প্রথম পরিচয় হয় তাদের। সে সময় রিয়াজ প্রধান নায়ক হলেও তিনা ছিলেন সাধারণ একজন সহকর্মী। সেই গানের দৃশ্যের শুটিংয়ের পর রিয়াজের মনে তিনা নামের মেয়েটি যেন বাসা বাঁধে। তবে তিনার মনের বাসা বাঁধতে রিয়াজকে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়। এভাবে যখন চলছিল তখন হঠাৎ একদিন রিয়াজ প্রেমের প্রস্তাব দেন তিনাকে। সে সময় তিনা শুটিংয়ের জন্য বিদেশে যাচ্ছিলেন। এয়ারপোর্ট থাকাকালীন রিয়াজ তাকে ফোনে প্রস্তাবটি করেন। তিনা অবশ্য কোনো উত্তর দেননি তখন। তিনার উত্তর পাওয়ার জন্য ২০ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল রিয়াজকে। যেদিন তিনা বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এলেন ঠিক সেদিন বিকালে অবশেষে ভালোবাসার প্রস্তাবে রাজি হন তিনা। ২০০৭ সালের ১৮ই ডিসেম্বর দুই পরিবারের সম্মতিতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। তাদের ভালোবাসার সংসারে রয়েছে একটি ছেলে।
মোশাররফ করিম-জুঁই করিম: ভালোবেসে বিয়ে করে সুখে সংসার করছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম ও অভিনেত্রী জুঁই করিম। তাদের বিয়ে হয় ২০০৪ সালের ৭ই অক্টোবর। বিয়ের চার বছর আগে থেকে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের শুরু। ঢাকার মালিবাগের চৌধুরীপাড়ায় মোশাররফের এক বন্ধুর একটি কোচিং সেন্টার ছিল। সেখানেই মূলত মোশাররফের সঙ্গে জুঁইয়ের প্রথম পরিচয়। এরপর ধীরে ধীরে একটা সময় মোশাররফ জুঁইকে জানান তার ভালো লাগার কথা। জুঁইও পছন্দ করতেন মোশাররফকে। তারপর থেকেই ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয় তাদের মধ্যে। তাদের ঘরে রয়েছে একটি ছেলে। ছেলেকে নিয়েই এ তারকা দম্পতির সুখের সংসার। গ্রন্থনায় বিনোদন ডেক্স