দুদকের মামলায় খালাস বাবর, ৮ বছরের সাজা বাতিল
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে আট বছরের সাজা থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে বিশেষ জজ আদালতের দেওয়া আট বছরের কারাদণ্ড বাতিল করে রায় দিয়েছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে বুধবার (২৩ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এদিন আপিলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের মামলায় আট বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল করেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।
২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন দায়ের করা হয় বলে জানান দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আপিলের একটি অনুলিপি হাতে পেয়েছেন এই আইনজীবী।
২০২১ সালের ১২ অক্টোবর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরের আট বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি বাবরের জ্ঞাত আয়-বহির্ভূতভাবে অর্জিত ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৮ টাকাসহ তার প্রাইম ব্যাংক গুলশান শাখার মালিকানাধীন ছয় কোটি ৭৯ লাখ ৪৯ হাজার ২১৮ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।
ওইদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও একই আইনের ২৭ (১) ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে তার পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাভোগের আদেশ দেওয়া হয়। তবে এই দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৮ মে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে যৌথবাহিনীর হাতে আটক হওয়া এ আসামির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের মামলাটি ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি রমনা থানায় করা হয়। মামলাটি করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৬ জুলাই দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক রূপক কুমার সাহা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বাবরের বিরুদ্ধে সাত কোটি পাঁচ লাখ ৯১ হাজার ৮৯৬ টাকার অবৈধ সম্পদ রাখার অভিযোগ করা হয়। তিনি দুদকে ছয় কোটি ৭৭ লাখ ৩১ হাজার ৩১২ টাকার সম্পদের হিসাব দাখিল করেছিলেন। তার অবৈধ সম্পদের মধ্যে প্রাইম ব্যাংক ও এইচএসবিসি ব্যাংকে দুটি এফডিআরে ছয় কোটি ৭৯ লাখ ৪৯ হাজার ২১৮ টাকা এবং বাড়ি নির্মাণ বাবদ ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৮ টাকা গোপনের কথা উল্লেখ করা হয়।
একই বছরের ১২ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।