সীসাযুক্ত পণ্য নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে ঢাকার মাঠে নেমেছেন তরুণরা
সীসাযুক্ত পণ্য নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে ঢাকার মাঠে নেমেছেন শতাধিক তরুণ-তরুণী। জাতীয় জাদুঘর থেকে শুরু হয়ে জাতীয় শহীদ মিনারে সমাপ্ত হওয়া একটি র্যালিতে অংশ নেন তারা।
এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন-এসডো কতৃক ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় র্যালিটি আন্তর্জাতিক সীসা বিষক্রিয়া প্রতিরোধ সপ্তাহ (আইএলপিপিডাব্লিউ)-২০২৪ এর অংশ হিসেবে আয়োজিত হয়। যার প্রতিপাদ্য ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ শুরু হোক সীসামুক্তভাবে।
বাংলাদেশে শিশুদের মধ্যে সীসা বিষক্রিয়া একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে সীসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সামান্য পরিমাণ সীসার সংস্পর্শও শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। যার ফলে মেধাশক্তি হ্রাস, শিখন অসুবিধা এবং আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, সীসার সংস্পর্শে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়, যার বেশিরভাগই শিশু। ২০১০ সাল থেকে এসডোর ক্রমাগত প্রচেষ্টার ফলে বিএসটিআই দ্বারা বাংলাদেশে গৃহস্থালির রঙে সীসার মাত্রা ৯০ পিপিএম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শিল্প রঙের ক্ষেত্রে এখনো কোনো নিয়ম ধার্য করা হয়নি, যা শ্রমিক এবং সাধারণ মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া সীসা ব্যাটারি, খেলনা, বাসনপত্র প্রসাধনী সামগ্রী এমনকি মসলায়ও ব্যবহৃত হচ্ছে, যা আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি করছে। তাই সব ক্ষেত্রে এটি নিষিদ্ধ করা জরুরি।
তরুণ-নেতৃত্বাধীন এই র্যালির উদ্দেশ্য ছিল চলমান এই জনস্বাস্থ্য সংকটের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ এবং শিশুদের এই অদৃশ্য বিষ থেকে রক্ষা করার জন্য আরও কঠোর নিয়মের প্রয়োগ। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ শুরু হোক সীসামুক্তভাবে শ্লোগানে র্যালিটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে জাতীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন গঠন করে শেষ হয়। তরুণরা নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান যাতে তারা সীসাযুক্ত সব রঙ নিষিদ্ধ করেন এবং পরিবেশে সীসা সংস্পর্শ কমাতে বিদ্যমান আইনগুলো কার্যকর করেন।
র্যালির মাধ্যমে জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি, নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে তারা কঠোর নিয়ম তৈরি করেন এবং তা কার্যকর করেন। শিশুদের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশকে সব উৎস থেকে সীসা দূর করতে হবে এবং সবার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য।