ডায়েট করার কিছু প্রয়োজনীয় টিপস
ডায়েট করার কিছু প্রয়োজনীয় টিপসঃ
চলুন প্রথমে প্রচলিত কিছু ধারণা নিয়ে আলোচনা করি।
অনেকের ধারণা ডায়েটে ভাত অফ করে দিলেই ওয়েট কমানো ইজি। এটা ভেবে অনেকেই হঠাৎই কার্বোহাইড্রেট অফ করে দেন। যেটা টোটালি ভূল সিদ্ধান্ত এবং আনহেলদি ডায়েট। ভাত টোটালি অফ করলে ওয়েট হয়তো কিছুটা কমবে প্রথম অবস্থায়। কিন্তু পরবর্তীতে স্থির থাকবে। আর অনেক সাইড ইফেক্ট ও আছে।
অনেকেই হয়তো বলবেন, বাইরের দেশের মানুষ তো ভাত খায়না। তারা তো দিব্যি সুস্থ থাকে। তাহলে আমরা কেন পারবোনা। এখানে আপনার কথার মাঝেই উত্তরটা লুকিয়ে আছে। ফ্যাক্ট হল বাইরের দেশ এবং বাংলাদেশ। বাইরের দেশের লোকেরা ছোট থেকে ওভাবেই অভ্যস্ত, কিন্তু আমরা না।
অনেকেই ইউটিউব থেকে ১২০০/১৪০০ ক্যালরির ডায়েট চার্ট ফলো করে ডায়েট করে থাকেন। আচ্ছা সত্যি কি এসব হেলদি ডায়েট? আমার মনে হয় নিজের ডায়েট চার্ট আপনার নিজের চেয়ে ভালো আর কেউ জানবেনা।
এখন আর একটা কথায় আসি। টক দই, জিরা পানি, আদা পানি, দারুচিনি পানি, লেবু পানি, গ্রীন টি, আপেল সিডার ভিনেগার এসব খেলেই কি ওজন কমে? এতো সোজা হলে কেউ আর মোটা থাকতোনা। আপনি একটা হেলদি ডায়েটের পাশাপাশি এগুলার যেকোন একটা রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে কাজ টা একটু তাড়াতাড়ি হবে। এসব আপনার বডি কে ডিটক্স করবে।
এখন চলুন মূল আলোচনায় চলে যাই। ডায়েটে কি কি করবেন সেটা সম্পর্কেঃ
১.প্রথমেই ফার্স্ট ফুড/ তেলে ভাজা স্টপ করে দিন।
২. মিষ্টি জাতীয় খাবার একেবারেই কমিয়ে দিন।
৩. পানি বেশী করে পান করুন।
৪. তিন বেলা টাইম মতো খাবার খান। সকাল (৭.৩০-৮.০০) টার মধ্যে। দুপুর (১২.৩০-১.৩০)টার মধ্যে। রাত (৭.০০-৮.০০) টার মধ্যে।
৫. কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে দিন। কিন্তু অফ করতে যাবেননা।
৬. নার্ভকে কন্ট্রোল করুন।
৭. যদি সময় বের করতে পারেন তাহলে ৩০-৪০ মিনিট হাঁটতে পারেন।
৮. ব্যায়াম করতে পারলে ভালো। তবে নিজের শরীর যদি ফ্ল্যাক্সিবল না হয় তাহলে ব্যায়াম করতে যাবেননা।
৯. ডায়েটে মেইন হল ধৈর্য্য আর অপেক্ষা। মনে রাখবেন এটা একটা লং জার্নি।
১০. দিনে ২ টা না হলেও ১ টা করে ডিম খাবেন অবশ্যই। এতে করে আপনার প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হবে।
১১. ডায়েটে থাকাকালীন সময়ে মাসে তিন দিন, আই মিন ১০ দিনে একদিন নিজের পছন্দের খাবার খাবেন। কিন্তু সেটা একান্তই অল্প পরিমানে। তা নাহলে মস্তিস্কে ফুড ডিপ্রেশান তৈরী হবে। কিন্তু মনে রাখবেন একদমই বেশি খাবেননা। যাস্ট টেস্ট করা যাকে বলে সেভাবে খাবেন।
১২. প্রতিদিন ৪-৫ টা করে খেজুর খাবেন তাতে আপনার শরীর উইক হবেনা।
এখন আসি খাবারের পরিমানেঃ
অনেকেই বলে আমি খুব কম খাই, কিন্তু প্লেট ভরে ভাত নেয়। আমি শুধু ভাবি এরা বেশি খেলে কতখানি খেত? স্বাভাবিক খাওয়ার পরিমান কতখানি জানেন? এক কাপ ভাত হল স্বাভাবিক পরিমান। হাফ কাপ ভাত যদি খান তাহলে আপনি বলতে পারেন হ্যাঁ আমি একটু কম খাই।
একটা ইজি হিসাব শিখিয়ে দেই। যদি ওয়েট কমাতে চান তাহলে খাবারের পরিমান কমিয়ে অর্ধেক করে দেন। ধরেন ৩ টা রুটি খেলে আপনার পেট ভরবে। তাহলে আপনি দেড়টা বেশি কোনভাবেই খাবেননা। যদি ২ টাতে পেট ভরে তাহলে ১ টা করে দিন। আর ১ টা হলে অর্ধেক। যদিও যারা ১ টা রুটি খেয়ে পেট ভরে তারা মোটা না। যাই হোক ভাতের ক্ষেত্রেও সেম।
এখন আসেন ভাত খাবেন নাকি রুটি খাবেন? যেটা আপনার ইচ্ছা। তবে যাই খান পরিমান টা মাথায় রাখবেন। রুটিতে যাদের গ্যাসের প্রবলেম হয় তারা রুটি অ্যাভোয়েড করবেন। ভাতে গ্যাস হয়না। আর সকালে খাবার টা অবশ্যই খাবেন। সকালের খাবার টা যাতে আদর্শ খাবার হয়। বাড়তি কিছু খেতে হলে সিজনাল ফল খান। সবজী বেশী খাবেন তবে কার্ব জাতীয় সবজী অ্যাভোয়েড করবেন। কোন বেলাতেই হাফ কাপের বেশি ভাত না। তবে ছেলে মানুষ হাফ কাপের একটু বেশি খাবেন। আর প্লেটে ২ বার ভাত তুলবেননা। আর একটা মানুষের এত বেশি খাবার খাওয়ার দরকার পড়েনা। কম খান, সুস্থ থাকুন, ফিট থাকুন, সুন্দর থাকুন।