বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ: সাবেক প্রাণিসম্পদমন্ত্রীসহ ৪ এমপির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
সাবেক মৎস্য ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী এবং ফরিদপুর ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমানসহ ৪ এমপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২৮ আগস্ট) কমিশন সভা থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে।
অন্যরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন), দিনাজপুর ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম, মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর।
তাদের বিরুদ্ধে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের তথ্য আমলে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার আয় ও সম্পদের পরিমাণ ছিল বেশ কম। সে সময় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ২২ লাখ ৯০ হাজার ৯৬৬ টাকা। ১৫ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে প্রায় ২০ গুণ। বর্তমানে নগদ টাকাসহ চার কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার ৯৬৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে চুয়াডাঙ্গা সদরে ৩ তলা বিশিষ্ট বিলাস বহুল জোয়াদ্দার কুটির নামীয় বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় জমি কেনার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া দুর্নীতির অর্থে প্রায় ৮০-১০০ টি এসি/ননএসি বাসসহ ১৫-২০ টি ট্রাক; তার স্ত্রী ও নিজ নামে সঞ্চয়পত্র; ১ টি প্রাডো গাড়িসহ তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।
দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিমের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ঢাকার উত্তরায় বাড়ি, উত্তরা মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির ওপর বাড়ি, ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট, ২টি গাড়ি কেনার তথ্য পেয়েছে দুদক।
এছাড়া তার নামে দিনাজপুরের উথরাইল মৌজা, পুচকুর মৌজা, রামপুর মৌজা ও জালালপুর মৌজায় বিপুল পরিমাণ জমি; এছাড়াও তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।
মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শেখরের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে মাগুরা জেলার জাগলা নামীয় স্থানে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে অটোব্রিকস ফিল্ডের ব্যবসা, মাগুরা জেলার চাওলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত নগর পদ্দবিলে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে মৎস্য খামার; তার নিজ নামে ১০টি ট্রাক কেনার তথ্য পেয়েছে দুদক।
আত্মীয়-স্বজনের নামে গাড়ি, মাগুরায় একাধিক বাণিজ্যিক ভবন, বিভিন্ন জায়গায় অনেক জমি এবং নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদে ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে শিখরের বিরুদ্ধে।
ফরিদপুর ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রীর আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি; ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ফরিদপুরের মধুপুরে ভবন নির্মাণ, রাজউক (পূর্বাচল)সহ বিভিন্ন জায়গায় জমি ক্রয়; নিজ নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি, দি সিটি ব্যাংক পিএলসি এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে সঞ্চয় পত্র কেনার অভিযোগ রয়েছে।
তার স্ত্রী মির্জা নাহিদা হোসেনের নামে শান্তা দিগন্ত টাওয়ারসহ ৪ টি ফ্ল্যাট; এছাড়াও দেশের বাইরে টাকা পাচার করে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন এবং কানাডায় একাধিক বাড়ি ক্রয়ের তথ্য গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে দুদক।