সাভারের আশুলিয়ায় গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এক সেলুনকর্মীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সাংবাদিকসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) নিহতের ছোট ভাই আনারুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী ইমরুল হাসান বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করা হয়েছে। আদালত আগামী ৩ দিনের মধ্যে আশুলিয়া থানাকে মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দিয়েছেন।’
নিহতের নাম জাহিদুল ইসলাম সাগর (২৮)। তিনি রংপুরের তাজহাট থানাধীন দুর্গাপুর এলাকার মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজের সাভার প্রতিনিধি জাহিদ হাসান শাকিলসহ কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ৭৫ জন নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০-২০০ জনকে।
বাদী আনারুল ইসলামের অভিযোগ, তারা পরিবারের সঙ্গে আশুলিয়ার বাইপাইল বগাবাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন। তার ভাই (সাগর) একটি সেলুনের দোকানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ঘটনার দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন সাগর। দুপুর ২টার পর বাইপাইল এলাকায় স্থানীয় এমপি সাইফুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সাগরকে মারধর করার পাশাপাশি ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শামীম আহম্মেদ ভুঁইয়া সাগরের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর সাগরের মরদেহ গ্রামের বাড়ি রংপুরে দাফন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মামলায় আসামি করা বিষয়ে সাংবাদিক জাহিদ হাসান শাকিল বলেন, ‘আন্দোলনের পুরোটা সময়জুড়ে মাঠপর্যায়ে থেকে আমি ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন কাভার করেছি। আমাকে কীভাবে এই মামলায় আসামি করা হলো তা কোনোভাবেই বোধগম্য নয়। আমি কীভাবে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত? বিষয়টি আমাকে বেশ হতবাক করেছে, একই সঙ্গে এটি দুঃখজনকও।’ নিজেকে প্রতিহিংসার শিকার বলেও দাবি করেন এই সাংবাদিক।