বিদ্রুপ করা জঘন্য গুনাহ

0

কাউকে নিয়ে ট্রল বা ব্যঙ্গ করা এবং সব বিষয়ে মজা নেওয়া ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচয় দেয়। এটা মুমিনের কাজ নয়। কারণ মুমিন কখনো অন্যকে বিদ্রুপ  করতে পারে না। কারও দোষচর্চা করতে পারে না। কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিতে পারে না।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, কোনো সম্প্রদায় যেন অপর সম্প্রদায়কে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ইমানের পর মন্দ নাম কতই না নিকৃষ্ট! আর যারা তাওবা করে না, তারাই তো জালিম। (সুরা হুজরাত, আয়াত : ১১)

এ আয়াতে কোনো সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে নিয়ে বিদ্রুপ করতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকার মানুষ নিয়ে, এক জেলা অন্য জেলা নিয়ে, এক দল অন্য দলকে নিয়ে হরহামেশাই ট্রল করে থাকি। কারও কারও অবস্থা দেখে মনে হয় এরা ট্রল করাকে কাজ মনে করে।

কারও অসুস্থতা নিয়ে, কারও মৃত্যু নিয়েতো ট্রল করার প্রশ্নই ওঠে না।  আবু বকর (রা.) অসুস্থ হলে একটি কবিতা পড়তেন, যার ভাবার্থ এই, ‘প্রতিটি ব্যক্তিকে নিজ পরিবারে সুপ্রভাত বলা হয়, অথচ মৃত্যু তার জুতার ফিতার চেয়েও অতি নিকটে।’

মানুষ যেকোনো সময় আল্লাহর ডাকে সাড়া দিতে হতে পারে। কেউ জানে না, কখন, কোথায়, কীভাবে আল্লাহ তাকে তলব করবেন। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘কেউ জানে না, আগামীকাল সে কী অর্জন করবে। আর কেউ জানে না, কোন স্থানে সে মারা যাবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ।’ (সুরা লুকমান, আয়াত : ৩৪)

এ কারণে মুসলিম-অমুসলিম কারও অসুস্থতা ও মৃত্যু নিয়ে ট্রল করতে নেই। হাদিসে আছে, একদিন রাসুল (সা.)-এর পাশ দিয়ে একটি জানাজা যাচ্ছিল। তখন তিনি দাঁড়িয়ে যান। এ সময় তাকে বলা হয়েছিল, জানাজাটি একজন ইহুদির। তিনি বলেছিলেন, ‘সেকি মানুষ নয়?’ (বুখারি, হাদিস : ১৩১২)

মহানবী (সা.) একজন অমুসলিমের মৃত্যুতেও সহমর্মিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। আর আমরা নোংরা রাজনীতি করতে গিয়ে হিংসার বশীভূত হয়ে অপর মুসলিমকে নিয়ে কুৎসা রটনা করছি প্রতিনিয়ত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা কারও প্রতি (খারাপ) ধারণা থেকে বিরত থাকো। কেননা কারও প্রতি (খারাপ) ধারণা করা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। তোমরা অন্যের দোষ অন্বেষণ করো না, অন্যের পেছনে গোয়েন্দাগিরি করো না, পরস্পর হিংসাকাতর হয়ও না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করো না এবং পরস্পর বিরোধে লিপ্ত হয়ও না। বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকো।’

(বুখারি, হাদিস : ৬০৬৪)

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com