গোটা ইউরোপের মতোই ফ্রান্সেও দক্ষিণপন্থীদের রমরমা ক্রমশ বাড়ছে

0

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের (ইইউ) নির্বাচনে হারার পর সময়ের আগেই ফ্রান্সের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বা পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্স এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। নিজের জনপ্রিয়তা নতুন করে তৈরি করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। কিন্তু তিনি যা ভাবেছিলেন, বাস্তবে তা হলো না।

গোটা ইউরোপের মতোই ফ্রান্সেও দক্ষিণপন্থীদের রমরমা ক্রমশ বাড়ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে তার প্রতিফলন দেখা গেছে। এই পরিস্থিতিতে অতি দক্ষিণপন্থীদের জনপ্রিয়তা কমাতে জোটবদ্ধ হয়েছিল ফ্রান্সের বামপন্থী দলগুলো। দেশটিতে এটি একটি বৃহত্তর জোট হিসেবে সামনে আসে। যার মধ্যে অতি ছোট বামপন্থী দল যেমন আছে, তেমনই সমাজতান্ত্রিক, গ্রিন পার্টির মতো দলও আছে। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল দক্ষিণপন্থীদের জনপ্রিয়তা কমানো।

সেই জোটের নাম দেওয়া হয়েছিল নিউ পপুলার ফ্রন্ট। গত রোববারের নির্বাচনের পর দেখা গেলো সেই জোট সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। যদিও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তারা পৌঁছাতে পারেনি। সব মিলিয়ে তাদের দখলে ১৮২টি আসন। তার ঠিক পরেই আছে ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী দলের নেতৃত্বে তৈরি জোট এনসেম্বল। তৃতীয় স্থানে দক্ষিণপন্থী এনআর। আর চতুর্থ স্থানে রিপাবলিকান দল।

সোমবার ফলাফলের পূর্বাভাস দেখেই বামপন্থী জোটের অন্যতম নেতা জঁ লুক মেলঁশঁ ঘোষণা করেন, তারাই সরকার গড়বেন। লেফট উইং ফ্রান্স আনবোড (এলএফআই) দলের নেতা তিনি। এই ঘোষণার সময় তার পাশে ছিলেন জোটের অন্য নেতারাও।

এরপর গ্রিন পার্টির প্রধানও একই কথা বলেন। তিনি জানান, আমরা জিতেছি। আমরাই সরকার গঠন করব। এ ছাড়া সমাজতান্ত্রিক দলের প্রধান অলিভার ফউরে বলেছেন, নতুন ইতিহাসের মুখোমুখি ফ্রান্স। পপুলার ফ্রন্টকেই ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, কোনোভাবেই মধ্যপন্থী জোটের সঙ্গে হাত মেলাবেন না তারা। এর আগে এই সোশ্যালিস্ট পার্টি বা সমাজতান্ত্রিক দল ক্ষমতায় এসেছে। দুইবার ফরাসি সরকার চালানোর অভিজ্ঞতা আছে তাদের।

সাম্প্রতিককালে একাধিক ঘটনায় ফ্রান্সের বামপন্থী দলগুলো তাদের মতামত স্পষ্ট করে জানিয়েছে। তাদের মতামত ম্যাক্রোঁর অভিমতের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। গাজার ঘটনায় তারা সরাসরি ইসরায়েলকে কাঠগড়ায় তুলেছে।

এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ন্যাটোর যথেষ্ট সমালোচনা করেছিলেন মেঁলশঁ। তার বক্তব্য ছিল, ন্যাটো রাশিয়াকে উসকানি দিয়েছে, বিরক্ত করছে। ন্যাটো থেকে ফ্রান্সের সরে আসা উচিত বলেও তিনি মতপ্রকাশ করেছিলেন।

বামপন্থী জোটে এলএফআই-এর পরেই শক্তিশালী দল গ্রিন পার্টি। এর পরেই আছে ফরাসি কমিউনিস্ট পার্টি। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ফরাসি অঞ্চল পলিনেসিয়ার স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছে যে বামপন্থী দল, তারাও এই জোটে আছে।

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপন্থীদের সঙ্গে জোটবদ্ধ সরকার গড়তে চান না মেঁলশঁ-র মতো নেতারা। অন্যদিকে ম্যাক্রোঁও চান না মেঁলশঁ-র মতো নেতার সঙ্গে সরকার গঠন করতে। কিন্তু ফ্রান্সে এবার কোনো জোটই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে যে দলই সরকার গঠন করবে, পার্লামেন্টে তাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com