কোটা আন্দোলন থেকে আপনার ছেলেকে সরে যেতে না বললে তার লাশ পাবেন: বাবাকে হুমকি
কোটা ইস্যুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রকে আন্দোলন থেকে না সরলে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। যদিও হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
সোমবার (৮ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাবার নম্বরে ফোন দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি। তিনি নাট্যকলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন রাফি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাফি বলেন, ‘গতকাল রাতে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে আমার আব্বুর নম্বরে ফোন দিয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমার বাবাকে ওই ব্যক্তি বলে, আপনার ছেলেকে যদি কোটা আন্দোলন থেকে সরে যেতে না বলেন তাহলে হয়তো আপনার ছেলেকে আর পাবেন না, তার লাশটা পাবেন। দেখা যাবে যে কোথাও না কোথাও মেরে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে লাশটা অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠানো হবে। পরে আবার আব্বু পরিচয় জানতে চাইলে লোকটি বলে, আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ক্যাম্পাসেই থাকি। এটা বলে ফোন কেটে দেয়।’
রাফি আরও বলেন, ‘যে নম্বর থেকে কল করা হয়েছিল সেটি নিয়ে আমি আমার সাধ্যমতো খোঁজ নিয়েছি। আন্দোলনে আমার সহযোগীরা ওই নম্বরটা চেক করে এবং বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছি, আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের হৃদয় আহমেদ রিজভী নামের এক শিক্ষার্থী। তার সঙ্গে আমার কোনো পূর্ব পরিচয় ছিল না। তার বাড়ি নরসিংদী জেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে থাকে। আমি যত জায়গায় খোঁজ নিয়েছি, সব জায়গা থেকে একই তথ্য এসেছে।’
এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত রিজভী শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ চুজ ফ্রেন্ড উইথ কেয়ারের (সিএফসির) অনুসারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম সংগঠনের সদস্য।
তবে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে হৃদয় আহমেদ রিজভী বলেন, ‘আমি রাফিকে ডিপার্টমেন্টের ছোট ভাই হিসেবে চিনি। সে একদিন এসে পরিচিত হয়েছিল। আমি বাড়িতে অবস্থান করেছি। হত্যার হুমকি দেবো কেন? আমি এ বিষয়ে জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাফি নিজেও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের একজন সদস্য। মুক্তিযুদ্ধ কোটা আমাদের অধিকার যা হাইকোর্ট আমাদের দিয়েছেন, সরকার দেয়নি। আমি এই কোটার কোনো বিরোধিতা করি না। কিন্তু গতকাল অপরিচিত এক নম্বর থেকে কল আসে এবং আমাকে রাফির সঙ্গে আন্দোলন করতে বলা হয়। আমি তাকেও চিনি না।’
এ বিষয়ে চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম বলেন, ‘একটা অভিযোগ প্রক্টর অফিসে দেওয়া হয়েছে। এটা লিগ্যাল বিষয়। পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’
-জাগো নিউজ