ইউরোপীয় রাজনীতিতে ডানপন্থার উত্থান হলেও ব্রিটেনে এর বিপরীত

0

ইউরোপজুড়ে ডানপন্থি জনতোষণবাদের (পপুলিজম) উত্থানের বিপরীতে যুক্তরাজ্যের মধ্য-বামপন্থি লেবার পার্টি পার্লামেন্ট নির্বাচনে ঐতিহাসিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। এই বৈপরীত্যপূর্ণ ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপীয় রাজনীতিতে ডানপন্থার উত্থান হলেও ব্রিটেনে এর বিপরীত স্রোত দেখা গেছে।

গত মাসের ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থি দলের সদস্যরা রেকর্ড সংখ্যায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নিজের দেশে আগাম নির্বাচন আয়োজন করেন। প্রথম ধাপের নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থি ন্যাশনাল র‍্যালি এগিয়ে রয়েছে। এছাড়া, নেদারল্যান্ডসেও ডানপন্থিদের সরকার গঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ডানপন্থি নেতার নেতৃত্বে রয়েছে ইতালি।

এর পেছনে বিভ্ন্নি কারণের কথা উঠে এসেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে- অর্থনীতির ধীরগতি, অভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং জ্বালানির উচ্চমূল্য। তবে ডানপন্থিদের প্রচারণায় ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে গেলেও এখন দেশটি মধ্য-বামপন্থার দিকে ঝুঁকছে।

লেবার পার্টির ঐতিহাসিক বিজয় সত্ত্বেও ব্রিটিশ ডানপন্থা সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হয়নি। কনজারভেটিভ পার্টি যদিও হতাশাজনক ফলাফল পেয়েছে। তবে অনেক জরিপের তুলনায় বেশি আসন জিতেছে। অপর দিকে, জনতোষণবাদী ডানপন্থি দল রিফর্ম ইউকে দলও তাদের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছে।

নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন রিফর্ম ইউকে পার্টি চারটি আসন জিতেছে। ফারাজ ব্রেক্সিটের পক্ষে প্রচারের জন্য পরিচিত। তিনিও এবার এমপি হয়েছেন। তার নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ব্রিটিশ রাজনীতিতে ডানপন্থিদের ভূমিকা বাড়িয়ে তুলবে।

ব্রিটিশ রাজনীতিতে ভোটের শতাংশ দিয়ে আসন সংখ্যা বিবেচনা করা যায় না। প্রতিটি আসন পৃথকভাবে নির্ধারিত হয়। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী বিজয়ী হন। যা বেশিরভাগ সময় ৫০ শতাংশের কম ভোট হয়।

কনজারভেটিভ ও রিফর্ম ইউকে মিলিতভাবে লেবারের তুলনায় বেশি ভোট পেয়েছে। কিন্তু লেবার পার্টি ৪০০টির বেশি আসনে জয়লাভ করেছে।

ব্রিটেনও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। যদি নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ব্যর্থ হন তাহলে জনগণের পছন্দে ফিরে আসতে পারেন ডানপন্থিরা।

কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা নির্বাচন নিয়ে দলটিতে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। নাইজেল ফারাজের সঙ্গে মিলিত হয়ে ভোট ভাগাভাগি করা নিয়ে বিতর্ক চলবে। কয়েকজন নেতা হয়ত চাইবেন ডানপন্থায় ঝুঁকে ফারাজের দলের ভোটারদের সমর্থন পেতে।আবার কেউ কেউ ফারাজের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধিতা করবেন। ফারাজ নিজে দলের বাইরে থেকে প্রভাবশালী ভূমিকায় থাকবেন।

যুক্তরাজ্যে মধ্য-বাম ঘরানার লেবার পার্টির জয় ইউরোপীয় ডানপন্থার উত্থানের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তবে ব্রিটেনের ডানপন্থি রাজনীতিতে ফারাজের প্রভাব এবং কনজারভেটিভ পার্টির ভাঙন ভবিষ্যতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: সিএনএন

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com