শ্বশুরের নামে ৬ কোটির ফ্লাট কিনে থাকেন ফয়সাল
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁর শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে ১৮টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে যেখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকা জমা হওয়া এবং পরে তার বড় অংশ উত্তোলনের তথ্য পেয়েছে দুদক।
জানা গেছে, মাহমুদ ফয়সাল রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী সড়কের যে ফ্লাটে থাকেন, সেটি তাঁর শ্বশুর আহম্মেদ আলীর নামে। ৩ হাজার বর্গফুটের ফ্লাটটির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ছয় কোটি টাকা। এই ফ্ল্যাটটি গত বছরের অক্টোবর মাসে কেনেন কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল। শ্বশুরের নামে থাকলেও বাস করেন তিনি ও তার পরিবার।
অবৈধ সম্পদের পাহাড় এনবিআর কর্মকর্তা ফয়সালেরঅবৈধ সম্পদের পাহাড় এনবিআর কর্মকর্তা ফয়সালের ওই ভবনের ব্যবস্থাপক সোহেল রানা বলেন, ফ্ল্যাটের মালিকের নাম আহম্মেদ আলী। কিন্তু ফয়সাল স্যার তার পরিবার নিয়ে থাকেন। ফ্ল্যাটের মালিকের সঙ্গে তার কি সম্পর্ক আমি জানি না। তবে দুদক জানিয়েছে, আহম্মেদ আলী ফয়সালের শ্বশুর। ফ্ল্যাটটির কাগজে কলমে দাম ৯৫ লাখ ৫০ হাজার হলেও বাজারমূল্য অনেক বেশি। কারণ সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় অবস্থিত ওই ফ্ল্যাটের মূল্য কম করে ১৮ হাজার টাকা প্রতি বর্গফুট। সেই হিসাব করলে এনবিআর কর্মকর্তার শ্বশুরের নামে থাকা ওই ফ্ল্যাটের দাম প্রায় ৬ কোটি টাকা।
জানা গেছে, মাহমুদ ফয়সাল তাঁর অপরাধলব্ধ আয়ের লেনদেন তাঁর শ্বশুর ও শাশুড়ির অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই করতেন। ফয়সালের শ্বশুর আহম্মেদ আলী একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। তাঁর শাশুড়ি মমতাজ বেগম পেশায় গৃহিণী। দুদক বলছে, ফয়সাল ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ নিজের ও স্ত্রীর নামে রাখার পাশাপাশি স্বজনদের নামেও রেখেছেন।
দুদকের নথি অনুযায়ী, ফয়সাল ও তাঁর ১১ স্বজনের নামে ১৯টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৮৭টি হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ির ব্যাংক হিসাবে। দুদক আদালতে জানিয়েছে, ফয়সাল তাঁর অপরাধলব্ধ আয় লুকানোর জন্য স্বজনদের নামে ৭০০টির মতো ব্যাংক হিসাব খুলেছিলেন। এর মধ্যে দুদক ৮৭টি ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে।