দাঁতে পোকা

0

মিষ্টি খেলে দাঁতে পোকা হবে ছোটবেলায় এ কথা শোনেনি এমন মানুষ মেলা ভার। অনেকের ধারণা দাঁতের যেখানে গর্ত হয়ে আছে, সে জায়গাকেই বোধ হয় দাঁতের পোকা বলা হয়। এ ধারণার কারণে অনেকে মিষ্টি খাওয়া কমিয়ে দেন। মিষ্টি কম খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই ভালো, তবে তার আগে জানতে হবে দাঁতে পোকা কী এবং কেন হয়।

দাঁতে পোকা কী

মূলত দাঁতে পোকা বলতে কিছু নেই। এটি আসলে মুখের ব্যাকটেরিয়া (জীবাণু) দ্বারা সৃষ্ট ক্ষয়। মিষ্টিজাতীয় খাবার মুখে অনেকক্ষণ জমে থাকলে সেটি একসময় পচতে শুরু করে। পাঁচন প্রক্রিয়ায় জমে থাকা খাবারের ব্যাকটেরিয়া থেকে নিঃসৃত এসিডিই মূলত দাঁতের এই ক্ষয়ের প্রধান কারণ। একে বলা হয় ডেন্টাল ক্যারিস। এর জন্য প্রধানত চারটি কারণ দায়ী। সেগুলো হচ্ছে, দাঁত নিজেই, ব্যাকটেরিয়া, শর্করাজাতীয় খাবার ও সময়। এসব কারণের কোনো একটি যদি অনুপস্থিত থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে ডেন্টাল ক্যারিস হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

জন্মগতভাবে দাঁতের আকৃতি উঁচু-নিচু হয়। এগুলোকে পিটস ও ফিমার বলা হয়। এ ছাড়া আছে দুই দাঁতের মধ্যে কিছু ফাঁকা স্থান, যেখানে খাবার বেশি জমে। তাই খাবার জমলে সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। খাবার জমে থাকার এ সময় যদি বেশি হয়ে যায়, তখনই ডেন্টাল ক্যারিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

দাঁতের ওপরের শক্ত যে সাদা অংশ থাকে, একে বলা হয় এনামেল। মানব শরীরের সবচেয়ে শক্ত অংশ এটি। এনামেলের নিচের অংশের নাম ডেনটিন। এটি এনামেলের চেয়ে কম শক্তিশালী। এনামেল ও ডেনটিন দাঁতের মজ্জাকে ঘিরে রাখে। ডেন্টাল ক্যারিস যখন শুরু হয়, তখন এটি এনামেলের ওপর আক্রমণ করে। কিন্তু সবচেয়ে শক্তিশালী হওয়ায় এনামেলে ক্ষতি কম হয়। এনামেল ভেদ করে যখন ডেন্টাল ক্যারিস ডেস্টিনে চলে যায়, তখন এটি দ্রুত বড় হতে থাকে। ডেন্টিন ক্ষয় করতে করতে ব্যাকটেরিয়া মজ্জাতে আক্রমণ করলে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। মজ্জাতে আক্রমণ করার আগে শিরশির অনুভূতি হতে পারে, অনেক সময় কোনো উপসর্গই বোঝা যায় না।

করণীয়

ডেন্টাল ক্যারিস প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করে নেওয়া উচিত। রোগী যদি খেয়াল করে দাঁতের কোনো অংশ কালো হয়ে যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে ডেন্টিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। ডেন্টিস্ট দাঁতের ক্ষয় হওয়া অংশটুকু পরিষ্কার করে ফিলিং করে দেবেন। কিন্তু ক্ষয়রোগ যদি মজ্জা পর্যন্ত হয়, সে ক্ষেত্রে দাঁতের সম্পূর্ণ মজ্জাটুকু বের করে দাঁতের সম্পূর্ণ মজ্জার অংশটুকু ফিলিং করে দেওয়া হয়। একে বলা হয় ‘রুট ক্যানেল’। রুট ক্যানেলের পর সাধারণত দাঁত ভেঙে গেলে দাঁতের ওপর শক্ত একটি আবরণ। একে বলে ক্রাউন বা ক্যাপ।

ডেন্টাল ক্যারিস শুরুতে ধরা পড়লেই ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া উচিত।

এ ছাড়া নিয়মিত দাঁতের চেকআপ করলে দাঁত সুস্থ থাকে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com