ফাইনালের নায়ক হবেন যারা
যুব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। মঞ্চটা বিরাট। আজ রবিবার যখন আইসিসি অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ শিরোপার লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ ও ভারত, তখন ২২ গজে সবার চোখ থাকবে দলের সেরা পারফরমারদের উপরও। দলের শিরোপা জয়ে, ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়ায় গুরত্বপূর্ণ হতে পারে তাদের পারফরম্যান্স। ফাইনালের সম্ভাব্য তারকাদের কথা জানাচ্ছেন নেয়ামত উল্লাহ
বাংলাদেশ
মাহমুদুল হাসান জয়
পুরো টুর্নামেন্টে মোটামুটি নিষ্প্রভ থাকলেও দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে বড়ো মঞ্চে হেসেছে তার ব্যাট। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদুল হাসান জয়ের দারুণ শতকেই প্রথমবারের মতো ট্রফির মঞ্চে নাম লেখায় বাংলাদেশ। এই শতক টুর্নামেন্টে দলের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকও বানিয়ে দিয়েছে জয়কে। পাঁচ ম্যাচে ৫৬ গড়ে ১৭৬ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের দিকে আজ ভারতের বিপক্ষে ফাইনালেও বড়ো কিছুর আশাই করবে লাল-সবুজ শিবির।
রাকিবুল হাসান
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ তুলেছিল ২৬১ রানের মাঝারি সংগ্রহ। প্রোটিয়াদের সেই লক্ষ্যটাকে এভারেস্টসম বানানোর বাকি কাজটা সেরেছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। সেদিন মাত্র ১৯ রানে ৫ উইকেট তুলে নেন। স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করা রাকিবুল মোট ১১ উইকেট নিয়েছেন বিশ্বকাপে। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন মোটে ৩.১০ হারে। উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি মিতব্যয়ী বোলিং দিয়ে ফাইনালেও অধিনায়ক আকবর আলীর তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন তিনি।
শরীফুল ইসলাম
চলতি টুর্নামেন্টে এখনো জয়ের নায়ক না বনলেও নেপথ্য ভূমিকায় কার্যকরীই ছিলেন শরীফুল ইসলাম। চার ইনিংসে ১৫.৮৫ গড়ে উইকেট শিকার করেছেন সাতটি, ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৩.৮২ করে। আজ ফাইনালে নতুন বলে ভারতীয় টপঅর্ডারকে কাঁপানোর গুরুদায়িত্বটা বর্তাবে তার কাঁধেই। ফরমের তুঙ্গে থাকা জশস্বী জয়সওয়ালকে ফেরাতে হবে ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই। পেস আক্রমণে এই বাঁহাতি পেসারই বাংলাদেশের বড়ো ভরসা।
ভারত
জশস্বী জয়সওয়াল
পাঁচ ইনিংসে ৩১২ রান করে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক জশস্বী জয়সওয়াল। গড়টাও রীতিমতো ব্র্যাডম্যানীয়, ১৫৬! সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করে দলকে তুলেছেন ফাইনালে। ফরমের তুঙ্গে থাকা ভারতীয় এই বাঁহাতি ওপেনার বাংলাদেশ শিবিরের মাথাব্যথার কারণ না হয়ে পারেই না।
সিদ্ধেশ বীর
চলতি বিশ্বকাপে টপ অর্ডারের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের তেমন কোনো পরীক্ষার মুখেই পড়তে দেয়নি ভারতীয় মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারকে। ‘ল অফ অ্যাভারেজ’-এর খড়গে যদি আজ দুই ওপেনার নিষ্প্রভ থাকেন, তবে ভারতের রানের চাকা সচল রাখার অবলম্বন হতে পারেন সিদ্ধেশ বীর। উইকেটের চারপাশে শটস খেলার দক্ষতা মারকুটে এই অলরাউন্ডারকে দিয়েছে দলটির ‘মিস্টার ৩৬০’ খেতাব। ফলে ব্যবধান গড়তে ভারতীয় ইনিংসের শেষদিকে তার অবদান নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে।
কার্তিক ত্যাগী
তিন ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের শুরুটা খুব ভালো হয়নি ভারতীয় পেসার কার্তিক ত্যাগীর। তবে নকআউটে পা রাখতেই যেন ধীরে ধীরে রূদ্রমূর্তি ধারণ করলেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার আর পাকিস্তানের বিপক্ষে করলেন দুই উইকেট শিকার। উইকেট শিকারের পাশাপাশি ৩.৪৯ গড়ে তার কৃপণ বোলিংয়ের কারণে ভারতের বোলিং লাইনের বড়ো অস্ত্র এই পেসার।
আজকের ফাইনালেও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারতের বড়ো আশা আর বাংলাদেশের হন্তারক হয়ে ওঠার যথেষ্ট রসদ আছে কার্তিকের ঝুলিতে।