দুদকের ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না বেনজীর
দুদকের একটি সূত্র জানায়, বেনজীরের নামে দুটি মামলা হবে। একটি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এবং আরেকটি ‘নন-সাবমিশন’ মামলা। বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব চেয়ে শিগগিরই তাদের ঠিকানায় বাহক মারফত নোটিশ পাঠানো হবে। নোটিশ গ্রহণ করার মতো কাউকে পাওয়া না গেলে তা বাসার দেয়ালে টানিয়ে দেওয়া হবে। বেনজীর সপরিবারে বিদেশে অবস্থান করায় নোটিশ গ্রহণ করতে পারবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ‘নন-সাবমিশন’ মামলা হবে।
দুদক আইনে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছরের সাজার বিধান রয়েছে। আর নন-সাবমিশন মামলার বিধান হলো তিন বছরের সাজা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, এ পর্যন্ত বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের যেসব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে, এর ভিত্তিতেই মামলা হবে।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী জীশান মীর্জা, মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে গত ২২ এপ্রিল জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। আগামী ৬ জুন বেনজীর ও ৯ মে তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে দুদক।
গত ২৩ ও ২৬ মে আদালত বেনজীর, তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে থাকা বিপুল সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন। তাদের ব্যাংক হিসাব ও শেয়ার অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করতে বলেছেন আদালত। ৮৩টি দলিলে তাদের ৬২১ বিঘা জমি ও গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট জব্দ এবং ৩৮টি ব্যাংক হিসাব ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন না বেনজীর
অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হচ্ছেন না বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। জানা গেছে, তারা সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। গত ৪ মে সেখানে যান তারা। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে বেনজীরের স্ত্রী জীশান মীর্জার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে আছেন তিনি।
আইনজীবীদের একটি সূত্র জানায়, বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এখনই দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন না। স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে দুদকে হাজির হওয়ার জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে সময়ের আবেদন করা হবে।
গত ২৮ মে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের ঠিকানায় জিজ্ঞাসাবাদের চিঠি পাঠানো হয়।
দুদকের আইনজীবী যা বলেন
বেনজীর আহমেদ তাঁর ব্যাংক হিসাব থেকে কত টাকা সরিয়েছেন, তা বের করতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। গতকাল রোববার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আগামী ৬ জুন তাঁকে (বেনজীর) দুদক কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। আমাদের সেই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। উনি আসবেন কিনা, সেটা আমাদের দেখতে হবে।’
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ডিএমপি কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
-সমকাল