নাগরিকরাই দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে: দুদক চেয়ারম্যান

0

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, দুর্নীতিবাজদের বিভিন্ন সংগঠনে প্রধান করা হচ্ছে, অনুষ্ঠানে অতিথি করে প্রথম সারিতে বসানো হচ্ছে। নাগরিকরাই দুর্নীতিবাজকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।

শনিবার (২৫ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) আয়োজিত দুর্নীতি দমনে নাগরিকদের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে এমন অভিযোগ করেন মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

নাগরিকদের উদ্দেশ্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্নীতিকে কেউ সমর্থন করে না। আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রধান যদি অত্যন্ত দুর্নীতিপরায়ণ হয়। তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেও আপনিও দুর্নীতিকে সহায়তা করছেন। এই বিবেকটা জাগ্রত করতে হবে। আপনার পাশের বাসায় ইলিশ মাছ ভাজে আপনি সেটার ঘ্রাণ পান না? আপনার পাশের বাসার লোকটা যদি দুর্নীতি করে আপনি টের পান না? আপনার কী কিছুই করণীয় নাই। আপনি কেবল দুদকের সমালোচনা করছেন। বাড়ির মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার বাসার ভাড়া ৫০ হাজার টাকা অথচ যার বেতন ২০-৩০ হাজার টাকা তাকে বাসা ভাড়া দিচ্ছেন কেন। নাগরিকদের কী কিছুই করার নেই। কিছু করার না থাকলে বর্জন তো করতে পারি’।

দুদকের চুনোপুঁটি ধরা প্রসঙ্গে অভিযোগ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, এখানে নাগরিকদের ভূমিকা নয়, দুর্নীতি দমনে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুর্নীতি বলতে আমরা বুঝি কেবল সরকারি কর্মকর্তারই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এটা ইচ্ছাকৃতভাবে বলা হয় কী না, শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কথা বলে অনেকেই প্রকাশ্যে যা খুশি তাই করে যায় এটাও দেখা দরকার। শিডিউলভুক্ত অপরাধ নিয়ে দুদক কাজ করে।

তিনি বলেন, অনেক সুন্দর পরিবেশে কাজ করতে পারছি। এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। অভিযোগের সংখ্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টোল ফ্রি নাম্বারে যেসব অভিযোগ আসে তার ৯০ শতাংশই আমাদের তফসিল বহির্ভূত। অভিযোগ অনুসন্ধান করে তারপর আমলে নিতে হয়। দুদকের বিররুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কথা বলা খুব সোজা। কাজ করা কঠিন। আমরা কাজ করি, আমরা সমালোচনা শুনবো। এই সমালোচনা শোনার মানসিকতা আমাদের আছে।

ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিয়মের বাইরে কাজ করলেই তো দুর্নীতি হয়। প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট দুর্নীতির জন্য দায়ী। সব ডিপার্টমেন্ট ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ওখানে দুর্নীতি অনিয়ম সব হচ্ছে। যারা ছেড়ে দিয়ে রেখেছে তারা আবার দেখছে দুদক কী করে। সেবা ক্রয়, টেন্ডারে সেখানে লোকজন যদি তাদের কাজটা ঠিক মত করে, আমাদের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ কম আসবে। অর্থপাচার হওয়ার পর জাতি জানতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠান বিএফআইইউ অর্থ পাচারের আমাদের একটা তথ্য দিয়েছে ৬ মাস পরে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আপনি চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার ডলার পাঠাবেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পারমিশন ছাড়া আপনি কি পারবেন? তাহলে টাকা পাচার হয় কীভাবে? মন্দ ঋণ যে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে ও অন্য ব্যাংকের নিরীক্ষা আছে না? তারা তো নিরীক্ষা করে। কোথাও আসে? যখন খেলাপি হয়ে যায় তখন জানা যায়। এর আগে কারা জানতে পারে ঋণগুলো যখন প্রসেস হয়, দেওয়া হয়। যে যার কাজ করছে না। তার ভেতরে দুদক নিয়ে আপনাদের অনেক প্রত্যাশা, এত প্রত্যাশা যে আমরা আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী আগাতে পারছি না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com