উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে পেটালেন আ’লীগ নেতা
কুড়িগ্রামের উলিপুরে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাঁধা ও উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবারের এ ঘটনায় উপজেলার সব সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক, বিধবা ও অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা উন্মুক্ত বাছাইয়ের মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য বুধবার উলিপুর এমএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে পৌর এলাকার নতুন উপকারভোগী নির্বাচনের কার্যক্রম চলছিল। বাছাইয়ের শুরুতে পৌর মেয়র, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ প্রেস ক্লাবের সভাপতি-সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
পরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা নিয়ম-বহির্ভূতভাবে তালিকা করার জন্য সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমানকে চাপ দিতে থাকেন। এতে সমাজসেবা কর্মকর্তা রাজি না হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, উপকারভোগী নির্বাচনের সময় সরকারি নিয়ম বহির্ভূতভাবে তালিকা করার জন্য স্থানীয় ওয়ার্ডের নেতারা চাপ দিলে আমি সম্মতি দেইনি। এতে পৌর আওয়ামী লীগের ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ও ৫নং ওয়ার্ডের সভাপতি আবদুর রহিম বাদশা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারতে এগিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তাদের নেতৃত্বে আমাকে কিল-ঘুষি দেয়া হয়।
তিনি বলেন, এ সময় উপস্থিত লোকজন তাদের আটক করেন। ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে আমি উপ-পরিচালক ও ইউএনওকে অবগত করি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর তালিকা করার প্রক্রিয়াটি স্থগিত না করে কার্যক্রম চালিয়ে যাই। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উলিপুর পৌর আওয়ামী লীগের ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ও ৫নং ওয়ার্ডের সভাপতি আব্দুর রহিম বাদশা জানান, তালিকা তৈরির সময় সিরিয়ালি না ডেকে, কখনও ৯নং ওয়ার্ড আবার কখনও ৭নং ওয়ার্ড এভাবে এলোমেলোভাবে কাজ করা হচ্ছিল।
সমাজসেবা কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে, তারা উভয়ে বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উলিপুর থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণের কথা স্বীকার করে বলেন, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উলিপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আবুল আলা জানান, কর্মসূচির শুরুতে ছিলাম, পরে চলে এসেছি। লোক মারফত শুনেছি সেখানে হট্টগোল হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল কাদের বলেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।