উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু
ঝালকাঠি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপেক্ষা করে আমির হোসেন আমু নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি অনুসারী নেতাকর্মীদের দিয়ে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠ ছাড়তে বাধ্য করছেন।
এমন অভিযোগ এনে বুধবার (১৫ মে) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অধ্যক্ষ রাজা রফিকুল ইসলাম। তিনি ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী সুলতান হোসেন খানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী।
রাজা রফিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার কীর্তিপাশায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলায় প্রার্থী সুলতান হোসেন খানসহ আহত প্রার্থীরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এজন্য সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থী হাজির হতে পারেননি।
ঝালকাঠির বর্তমান পরিস্থিতি সুষ্ঠু নির্বাচনে অনুকূলে নেই। হামলাকারীরা সকলেই শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মঙ্গলবারের হামলাকে তারা রিহার্সেল জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছে, আমির হোসেন আমুর মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার ফলাফল ভোটের দিনে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ-প্রশাসন কেউ আমাদের সহায়তা করছেন না। একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট সম্পন্ন করতে তাদের সদিচ্ছা নেই। শুধু মঙ্গলবার নয় এর আগেও আমির হোসেন আমুর মনোনীত প্রার্থী আনারস প্রতীকের আরিফুর রহমান অনেকবার প্রভাব বিস্তার করে আমাদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে বাধা দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশের কাছে, রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাইনি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন দল নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহে আলম, সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান সাইফুল্লাহ পনির সরাসরি নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছেন। এমনকি আনারস প্রতীকের প্রার্থী আরিফুর রহমানের সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল মাহমুদ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির, যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাউন্সিলর কামাল শরীফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মধুর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে আমাদের এলাকা ছাড়া করতে চাইছে।
মূলত আমির হোসেন আমুর মনোনীত প্রার্থী আরিফুর রহমান জেনে গেছেন তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবেন না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তার পরাজয় নিশ্চিত। এজন্য প্রভাব বিস্তার করে আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে সরাতে চাইছেন। স্পষ্ট করে আমরা বলতে চাই, নির্বাচন থেকে আমরা কিছুতেই সরে দাড়াবো না।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঝালকাঠি ২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, আমি গতকাল ঢাকায় ছিলাম। এসব বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঝালকাঠি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল শরীফ বলেন, মঙ্গলবার সুলতান খানের লোকদের ওপর কোনো হামলা হয়নি। তারা নিজেরা মারামারি করে আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। বরং তাদের সমবেত কর্মীরা কীর্তিপাশায় আরিফুর রহমানের লোকদের মারধর করে অফিস ভাঙচুর করেছে।