আসামি ধরতে গিয়ে বাড়ির নারী ও শিশুদের ওপর হামলার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

0

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর উপজেলার থলিয়ারায় আসামি ধরতে গিয়ে বাড়ির নারী ও শিশুদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে ডিবির এক কর্মকর্তা আসামির স্ত্রীর মাথায় পিস্তল ঠেকান। এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। ইতিমধ্যে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক, এসআই ও কনস্টেবলের বক্তব্য নিয়েছে তদন্ত কমিটি।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদিপ্রবাসী নুরুল আলম নুরুর বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয় নুরু সৌদি থেকে আরেকজনের স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি। পরে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এক থেকে দেড় মাস আগে সদর উপজেলার বিশ্বরোড এলাকার আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগে নূরুল আলমের নামে থানায় একটি মামলা করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নূরুল আলম সৌদি আরব থেকে আবদুল কুদ্দুসের এক আত্মীয়ের সাড়ে ৮০০ গ্রামে স্বর্ণ আনেন। কিন্তু পুরো স্বর্ণ বুঝিয়ে না দিয়ে কুদ্দুসকে মাত্র ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ দেন। বাদীপক্ষ সদর থানার পরিবর্তে পুলিশের অন্য শাখা দিয়ে মামলাটি তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেন। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে নূরুল আলমের থলিয়ারার বাড়িতে সাদাপোশাকে আসেন ডিবি পুলিশের সদস্যরা। তখন বাড়ির নারীসহ অন্যদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। ডিবি পুলিশের এসআই রেজাউল করিম একপর্যায়ে নূরুল আলমের স্ত্রী বন্যা বেগমের দিকে পিস্তল তাক করেন। পরে আসামিকে না পেয়ে পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে চলে যান।

ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন নূরুল আলমের ভাই সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে বাড়িতে অনুষ্ঠান চলছিল। সে সময় আমার ভাই বাড়িতে ছিলেন না। বিকেল চারটার দিকে তিন–চারজন লোক বাসায় ঢোকেন। তাঁরা আমার ভাই নূরুল আলমের খোঁজ নেন। ভাইকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী বন্যা বেগম (৩৩), আমার অন্তঃসত্ত্বা বোন তাসলিমা বেগমসহ (৩২) কয়েকজনকে মারধর করেন। আমার ভাইয়ের ৯ বছরের শিশুসন্তানকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। এসব দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও করায় আমার এক ভাতিজিকেও তাঁরা মারধর করেন। তাঁর মাথায় বন্দুক দিয়ে আঘাত করেন পুলিশ সদস্যরা। তাঁদের বাঁচাতে গেলে পুলিশ সদস্যরা আমাকে ও ভাবীকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছোড়েন।’

সারোয়ার আলম অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ তল্লাশি করে আমাদের ঘরের মালামাল, স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। মুঠোফোনের ভিডিও তারা ডিলিট (মুছে দেওয়া) করে দেয়। পুলিশ পিস্তল তাক করার পাশাপাশি গুলিও করেছে। গুলির খোসা আমাদের কাছে আছে। তদন্ত করলেই সব বেরিয়ে আসবে।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com