ওএমএসের চাল বিতরণে অনিয়ম: বস্তায় ৪ কেজি চাল কম দেন আওয়ামী লীগ নেতার ভাগনে
মোংলায় ওএমএসের চাল বিতরণে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে ডিলারের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় বরাদ্দের সিংহভাগ চালই তিনি খোলা ও কালোবাজারে বিক্রি করে আসছেন। এতে বঞ্চিত হয়েছেন এলাকার কয়েকশ সুবিধাভোগী।
উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডিলার রাজিব মৃধার এই অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে হাতেনাতেই। ডিলার রাজিব নির্ধারিত ৩০ কেজি চালের পরিমাণের চেয়ে কম দিয়েছেন। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সুন্দরবন ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মাঝে এই চাল বিতরণে অনিয়ম করেন তিনি।
রাজিব মৃধা মোংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম হোসেনের ভাগনে। সেই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি এই অনিয়ম করে আসছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে চাল দেওয়ার সময় রাজিব তার মামা আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিম হোসেনের জন্য ভোটও চেয়েছেন।
ইব্রাহিম হোসেন আসন্ন মোংলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এদিকে ওএমএস চাল বিতরণে অনিয়মের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না। জব্দ করেন ওজনে কম দেওয়া ১৫-২০ বস্তা সরকারি চাল। তবে এরমধ্যেই ডিলার রাজিব মৃধা গা ঢাকা দেন।
ইউএনও নিশাত তামান্না এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, এখানে সরকারের খোলাবাজারে ওএমএস চাল বিতরণে ওজনে কম দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ২৬-২৭ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। আর মানুষকে যে চটের বস্তায় চাল দেওয়ার কথা সেটাও ডিলার দেয়নি। অন্য প্লাষ্টিক বস্তায় এই চাল দিয়েছেন। চাল বিতরণে প্রতারণা, অনিয়ম এবং সরকারি চাল আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া সরকারি চাল বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহিনুর রহমান উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ইউএনও নিশাত তামান্না।
সুন্দরবন ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রেজাউল করিম বলেন, কয়েক বছর ধরেই ডিলার রাজিব মৃধা এই অনিয়ম করে আসছেন। তাকে নিষেধ করা হলেও কারো কথা শোনেন না তিনি। বুধবার অনিয়ম করে ১২ জন অসহায় গরিবদের ৩০ কেজি চালে ওজনে ২-৩ কেজি করে কম দিয়েছেন। এই চাল আবার গোপনে অন্যত্র বিক্রি করেন ডিলার রাজিব মৃধা।