যেখানে আওয়ামী লীগের নৌকা আছে, সেখানে জনগণ নেই: আমীর খসরু
নৌকা নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার সাহস নেই তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নৌকাকে বাদ দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নৌকা যেখানে আছে জনগণ সেখানে নেই।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ১০ই এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণার দাবিতে জেএসডি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের রাজনীতিবিদরা এখন ইতিহাসবিদ হয়ে গেছেন। যারা ক্ষমতায় আছেন তারা সবচেয়ে বড় ইতিহাসবিদ। আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের মনগড়া ইতিহাসকে বৈধ করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছেন। এ ইতিহাসকে জোর করে মানুষের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের যে মাইলফলক আছে, এখান থেকে কিছু বাদ দিতে পারবে না। জিয়াউর রহমানকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তৈরি করা যাবে না। স্বাধীনতা যুদ্ধে যারাই অবদান রেখেছেন সবাইকে স্বীকৃতি দিতে হবে। প্রজাতন্ত্রের ঘোষণার পর যে দেশ আত্মপ্রকাশ করেছে, ৫২ বছর পর সেদেশে অবৈধ সরকার বসে আছে। এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আমাদের কপালে কিছু নেই।’
উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক তুলে দিয়েছে। তারা ভাবছে নৌকা থাকলে মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসবে না। নৌকা নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার সাহস তাদের নেই। অথচ তারা দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে যাওয়ার আইন বাতিল করেনি। আওয়ামী লীগ নৌকাকে ডুবিয়ে দিয়ে উপজেলা নির্বাচনে জনগনকে বিভ্রান্ত করছে। তারা এভাবে আরেকটি ভাওতাবাজির নির্বাচন করতে যাচ্ছে।’
‘সাংবাদিকরা প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞেস করতেন উপজেলা নির্বাচনে যাবো কি না? আমি তাদের বলি যে দেশে ভোট নেই, নির্বাচন নেই- সে দেশে নির্বাচনে যাওয়ার আলোচনা কীভাবে আসে আমি বুঝি না। গত ৭ জানুয়ারি জনগণ দেশের নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ৯৫ শতাংশ ভোটার ভোট দেয়নি। বাকি ৫ শতাংশকে জোর করে নিয়ে গেছে।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা যারা বিরোধীদলে আছি তারা ঐক্যের মধ্যে আছি। আমরা শক্ত আছি। অনেকে জিজ্ঞেস করেন আন্দোলন আবার কবে হবে? আমি বলি, আন্দোলন বন্ধ হলো কবে? আন্দোলন চলমান। দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ এ আন্দোলনের পক্ষে রায় দিয়েছে। কারণ মানুষের কাছে আমরা নৈতিকভাবে জয় পেয়েছি।’
দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আলোকে ১০ এপ্রিল ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণার দাবিতে আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)।
জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।