গুরুত্বপূর্ণ আমলের মাস শাওয়াল
হিজরি বছরের দশম মাস শাওয়াল। হজের মাসগুলোর একটিও এ মাস। শাওয়াল মাস থেকেই হজের উদ্দেশ্যে মুসলিম উম্মাহ পবিত্র নগরী মক্কায় যাওয়া শুরু করেন। এ মাসের প্রথম দিন পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করে রোজাদার মুমিন মুসলমান। এটি ঈদের মাস হওয়ায় এ মাসের আমলের বরকতও অনেক বেশি। শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ঈদের নামাজ ও ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব ইবাদত। শাওয়াল মাসে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আমল। সেগুলো কী?
শাওয়াল মাস
‘শাওয়াল’ শব্দটি আরবি। এর অর্থ হলো উঁচু করা, উন্নতকরণ, পাল্লা ভারী হওয়া, গৌরব করা, বিজয় লাভ করা, প্রার্থনায় হাত উঠানো ইত্যাদি। প্রতিটি অর্থের সঙ্গেই শাওয়াল মাসের রয়েছে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
শাওয়াল মাসের আমলে উন্নতি লাভ হয়, নেকির পাল্লা ভারী হয়, আমলে সাফল্য আসে, কল্যাণ প্রত্যাশী আল্লাহর কাছে উভয় হাত প্রসারিত করে প্রার্থনায় মগ্ন হয়। রমজানের পূর্ণ মাস রোজা পালনের পর আরও কয়েকটি রোজা রাখার আনন্দে বিভোর হয় মুমিন। যে রোজার বরকতে বছর জুড়ে রোজা রাখার সাওয়াব মিলে। এ সবই শাওয়াল মাসের আমলের সার্থকত
শাওয়ালের সুন্নাত আমল
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণ না করেন, শাওয়াল মাসে বিয়ে-শাদি সুন্নত, যেরূপ শুক্রবারে ও জামে মসজিদে ও বড় মজলিশে আক্দ অনুষ্ঠিত হওয়া সুন্নত। কারণ, মা আয়েশার বিয়ে শাওয়াল মাসের শুক্রবারে মসজিদে নববিতেই হয়েছিল। ছয় রোজা শাওয়াল মাসের বিশেষ সুন্নত।’ (মুসলিম)
শাওয়ালের ৬ রোজা সুন্নাত
শাওয়াল মাসের এ ছয়টি রোজা মূলত সুন্নত। যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে তা আমল করেছেন এবং আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পরিভাষায় এগুলোকে নফল রোজা বলা হয়। কারণ, এগুলো ফরজ ও ওয়াজিব নয়, অতিরিক্ত তথা নফল। এ মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
‘যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
রোজা রাখার নিয়ম
মাসের যে কোনো সময় এই রোজা আদায় করা যায়। ধারাবাহিকভাবে বা মাঝে মাঝে বিরতি দিয়েও আদায় করা যায়।
মনে রাখতে হবে
শাওয়ারের রোজার ইফতারে দেরি করতে গিয়ে যেন মাগরিবের জামাআত ও নামাজ তরক না হয়। এ ক্ষেত্রে রোজা খুলে নামাজ পড়ে ইফতার-খাওয়া দাওয়া করাই উত্তম। বছর জুড়ে সাওয়াব লাভের আশায় শাওয়ালের ৬ রোজার পাশাপাশি হজের প্রথম মাস হিসেবে এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করা জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ মাসের বরকত লাভে আমল-ইবাদতে নিয়োজিত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।