নেত্রকোনায় প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ার খবর শুনে অভিমানে আত্মহত্যা করলেন যুবক
প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ার খবর শুনে অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন রহিমল হাসান বাবু (২৩) নামে এক যুবক।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের পাইলটি গ্রামে শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
রোববার লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রহিমল হাসান বাবু ওই উপজেলার পাইলটি গ্রামের হাবিবুল মিয়ার ছেলে। আর বাবুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকা মেয়েটির (১৮) বাড়ি একই গ্রামে। তারা দুজনই ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।
বাবুর পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্পর্কীয় চাচাতো বোন মেয়েটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বাবুর। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকত এবং পোশাক কারখানায় চাকরি করত। বাবুও চার বছর ধরে ঢাকায় পোশাক কারখানায় পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। সেখানে দুজনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত সপ্তাহে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসে মেয়ে ও বাবা-মা। বাড়িতে আসার পর বাবা-মা ও চাচারা মিলে মেয়েটির বিয়ের আলোচনা করতে থাকে তারই ফুফাতো ভাই বারহাট্টা এলাকার সায়েম মিয়ার সঙ্গে। একথা শুনে বাবুর পরিবার মেয়েকে বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে আলোচনা করতে তাদের বাড়িতে যান। কিন্তু বাবুর সঙ্গে মেয়েটিকে বিয়ে দিতে রাজি হননি পরিবারের লোকজন। এতে ক্ষোভে আত্মহত্যার হুমকি দেন বাবু।
পরে এ বিষয় নিয়ে এলাকার লোকজন আলোচনায় বসলে তাতেও ব্যর্থ হয়। পরে শুক্রবার রাতে ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে পারিবারিকভাবে আলোচনা চূড়ান্ত হয়। সেই সঙ্গে তাদের দেওয়া নাকফুলসহ স্বর্ণালংকার পরানো হয় মেয়েটিকে। গতকাল শনিবার সকালে মেয়েটিকে নিয়ে ঢাকায় চলে যায় তার বাবা-মা। এতে ক্ষোভে এদিন সন্ধ্যায় নিজের ঘরে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বাবু। পরে ক্ষোভে মেয়ের বাবা-চাচার বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বাবুর স্বজনরা।
এ বিষয়ে বাবুর চাচা কামাল মিয়া বলেন, ‘বাবুর সঙ্গে মেয়েটির দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। ঢাকায় চাকরি করে সব টাকা ওই মেয়ের পেছনেই ব্যয় করে বাবু। মেয়ের জন্য সে পাগল ছিল। বিয়ের জন্য আমরা সবাই গিয়েছি মেয়ের বাবাসহ পরিবারের সবার কাছে। তাদের কাছে বিয়ের জন্য অনেক অনুরোধ করেছি কিন্তু তারা রাজি হয়নি। রাজি হলে আজ বাবুর মতো একটা তরুণ প্রাণ ঝড়ে যেত না। আমরা এর বিচার চাই। তবে মেয়ের বাড়ি ঘরে হামলার বিষয়টি তারা অস্বীকার করেন।তাদের দাবি-তারা নিজেরাই তাদের ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে এলাকা ছেড়েছে।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সাজন মিয়া বলেন, ‘বাবুর সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল মেয়েটির। অন্যত্র বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ায় ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করেছে। এটা একটা দুঃখজনক ঘটনা।’
এদিকে রোববার মেয়ের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে পাশের বাড়ির জ্যোস্না আক্তার নামে এক নারী জানান, বাবু আত্মহত্যা করার পর মেয়ের বাড়ির লোকজন ভয়ে অন্যত্র চলে যায়। পরে বাবুর পরিবারের লোকজন এখানে এসে হামলা চালায়। তিনটি ঘর ও ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। গোয়ালে থাকা দুটি গরুও নিয়ে যায়।