‘আপনাকে কোনওদিনও ক্ষমা করা হবে না’, নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠিতে জানালেন ভারতের নারীরা

0

হিংসার রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদীর মদত দেওয়ার ভূমিকা দেখতে দেখতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ভারতের নাগরিকরা। কোনও নেতা বলেন, ‘বিরোধিতাদের গুলি করে মারুন।’ আবার কেউ বলেন, ‘শাহিনবাগের নারীরা এত ঠাণ্ডাতেও মরছে না কেন?’ ‘আমাদের ছেলেরা বিভ্রান্ত হয়ে গুলি চালিয়েছে’, ‘জঙ্গিদের জন্য গুলি, বিরিয়ানি নয়’, ‘নাথুরামের হাতে গান্ধীজির হত্যা দেশকে বাঁচিয়েছে’। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে সকলের। বিশেষ করে নারীদের। ভারতে আর নিজেকে সুরক্ষিত লাগছে না কারওর। আর সেইখান থেকেই মোদীকে খোলা চিঠি পাঠালেন নারী বিপ্লবীরা। দিল্লির ১৭৫টি মহিলা সংগঠনের তরফ থেকে পাঠানো হয়েছে এই চিঠি।

চিঠির শুরুতে বড় বড় করে লেখা,

‘আমাদের ভোট দিন, নয়ত আপনাকে ধর্ষণ করে দেওয়া হবে। দিল্লির নারীদেরকে এই বার্তা দিতে চান আপনারা?’

‘দুষ্কৃতিদেরকে মহিলা ও শিশুদের দিকে বন্দুক তুলে রাখার সাহসটা আপনাদের দলই দিচ্ছে।’

‘সংবিধানকে সম্মান করে নির্বাচন লড়ুন। হিংসাকে উস্কে দিতে চেষ্টা করবেন না।’

তারপর শুরু হচ্ছে বাকি চিঠিটা। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে নারীদের শোচনীয় অবস্থার কথা। তা তাঁরা হিন্দু হন, বা খ্রিষ্টান। মুসলিম হন, বা শিখ। আদিবাসী হন, বা দলিত।

সকলেরই এক অবস্থা। আর এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে বিজেপির সমর্থকেরাই। শুধুমাত্র একটি নির্বাচনে জেতার জন্য। এর সঙ্গে শাহিনবাগ সম্পর্কে যোগী আদিত্যনাথ ও অনুরাগ ঠাকুরের কুৎসিত মন্তব্যের নিন্দা করলেন নারীরা। তাঁরা মোদীকে অকপটে জানিয়ে দিলেন, ‘একটি নির্বাচনের জন্য বিজেপি যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, যেভাবে নারীদেরকে যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণের ভয় দেখানো হচ্ছে, সেটাকে ইতিহাস ভুলবে না। আর আপনাকেও কোনওদিন ক্ষমা করা হবে না।’ সরকারের ‘বেটি বাঁচাও’ প্রকল্পের উল্লেখ করে তার সঙ্গে বর্তমানে প্রচলিত ধর্ষণ-সংস্কৃতির তুলনা করে নিন্দা করলেন তাঁরা। শেষে নারীরা জানালেন, যতই ভয় দেখাক এই সরকার, তাঁরা ভয় পান না। নতুন নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে, তার একেবারে সামনের সারিতে নারীরা রয়েছেন। ধর্ষণের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। ধর্ষণের যন্ত্রণা নারীরা পেয়েছেন। তাঁরা জানেন এই কুৎসিত হেনস্থার রূপটা। সেই যন্ত্রণাকেও হারাতে প্রস্তুত তাঁরা।

‘প্রিয় নরেন্দ্র মোদি, আপনি বিজেপির সমর্থক হতে পারেন। কিন্তু আপনি এই ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আপনার যেখানে প্রতিবাদ করা উচিত ছিল, তা না করে এইসমস্ত হিংসায় আপনি প্ররোচনা দিচ্ছেন। আর সেটা নীরব থেকে। একটু ভেবে দেখলে বুঝবেন। এই হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য কন্তু আপনিই একমাত্র দায়ী। তাই নীরব না থেকে এই হিংসার প্রতিবাদ করুন। ভারতের জন্য ভাবুন।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com