শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন: মেজর হাফিজ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, আমরা যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই।
স্বাধীনতার এক বছরের মধ্যে বুঝে গেলাম আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার চেতনাকে নষ্ট করেছে। তারা দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চায়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছি সেই গণতন্ত্র তারা ধূলিসাৎ করেছে।
শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ৭ মার্চের আগে ছাত্র সমাজের নেতৃত্ব দানকারী সিরাজুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। কিন্তু ৭ মার্চের ভাষণের পর ছাত্র সমাজ হতাশ হয়।
তিনি বলেন, সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। স্বাধীনতার ডাক তাদের সেই স্বপ্ন ভাঙতে পারেনি। ২৫ মার্চ রাতে বর্বরোচিত হামলায় মানুষ যখন দিগ্বিদিক ঘুরপাক খাচ্ছিল, তখন কোনো রাজনৈতিক দল পাশে দাঁড়ায়নি। তখন জনদরদী জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে নিজেকে রাষ্ট্রনায়ক ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তিনি। সেদিন জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ ঘোষণা না করলে আজকে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।
হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই। স্বাধীনতার এক বছরের মধ্যে বুঝে গেলাম আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার চেতনাকে নষ্ট করেছে। তারা দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চায়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছি, সেই গণতন্ত্র তারা ধূলিস্যাৎ করেছে। আওয়ামী লীগ কী ধরনের গণতন্ত্র চায় তার নমুনা আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি। আজকে মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই, ভোট দেওয়ার ক্ষমতা নেই। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পদলেহনে ব্যস্ত। এজন্য কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, আজ প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার মনে একই প্রশ্ন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সব কিছুর একটা অবসান আছে। এই গণতন্ত্রকে হত্যার বিচারের সময় হয়ে এসেছে। বিএনপি অনেক করেছে, এখন সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ দরকার। বিশেষ করে যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছি, সেই গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষায় তারা এগিয়ে আসবে, বিষেশ করে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহবান জানাই।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, আজকে দেশে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। মানুষ এখন ভোট দিতে যায় না। আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে শেষ করে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। আমাদের ছেলেদের গুম করছে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আজ রাজপথে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, এই লড়াইটা শুধু তারেক রহমান বা বেগম খালেদা জিয়ার একার নয়, দেশের সকলের। এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে রাজপথে নেমে আসতে হবে। ভয় পেলে চলবে না। সবাইে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। এই লড়াই জাতীয় লড়াই, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। আসুন সবাই মিলে রাজপথে নেমে একজোট হয়ে এক সারিতে দাঁড়াই।