যানবাহন থেকে ‘চাঁদাবাজির টাকা’ ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংঘর্ষ
রংপুর মহানগরীর প্রবেশদ্বার মডার্ন মোড়ে বিভিন্ন যানবাহন থেকে ‘চাঁদাবাজির টাকা’ ভাগ-বাঁটোয়ারা ও বাসস্ট্যান্ডে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঘণ্টাব্যাপী পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রংপুর মহানগরীর প্রবেশদ্বার মডার্ন মোড় দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। অনেক যানবাহন সেখানে যাত্রাবিরতি করে। শত শত যানবাহন থেকে প্রতিদিন গড়ে লাখ টাকার বেশি চাঁদা আদায় করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। এই টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে এবং ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১১ আগস্ট রাতে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক মোক্তারুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে চাঁদা আদায়ের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয় স্থানীয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাব্বি হোসেনের। এর জেরে যুবলীগ নেতা বাবুকে মডার্ন মোড় এলাকায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রাব্বি হোসেনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিলনসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় মামলা করেন যুবলীগ নেতা বাবুর পরিবার।
এ ঘটনার পর মডার্ন মোড় এলাকার কর্তৃত্ব চলে যায় ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিলনের হাতে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে যুবলীগ নেতা বাবু সুস্থ হয়ে আবারও মডার্ন মোড় এলাকায় এসে তার হারানো রাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে যুবলীগ নেতা বাবু ও তার সহযোগীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিলন ও ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি হোসেনের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে আমজাদ হোসেন, আখতারুজ্জামান ও আলতাব হোসেনসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ৩ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) উৎপল কুমার জানান, পূর্ববিরোধের জেরে শুক্রবার রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় ওই রাতেই ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন ১৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাব্বি হোসেন। পরে অভিযান চালিয়ে ওই ওয়ার্ডের যুবলীগের আহ্বায়ক মোক্তারুল ইসলাম বাবু ও তার ভাতিজা পলাশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।