সরকারের মদদে বিরোধীদের জামিন নামঞ্জুর: দ্রুত নেতা-কর্মীদের মুক্তি চায় বিএনপি
নির্বাচনের আগে নাশকতার নানা অভিযোগে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিশেষ করে রাজধানীতে গত ২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষের পর দেশজুড়ে গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার হয়। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর অবশ্য অধিকাংশ নেতা-কর্মী মুক্ত হয়েছেন। দলটির দাবি, এর পরও সারা দেশে অন্তত ৫০০ নেতা-কর্মী এখনো কারাবন্দী। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে এই নেতা-কর্মীদের মুক্তি চায় বিএনপি।
তবে দলটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, বিরোধী নেতা-কর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি, সাভার উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. কফিল উদ্দিনের জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রতিদিনই এ রকম ঘটনা ঘটছে। এই অবস্থায় কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের ঈদের আগে মুক্ত করা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সারা দেশে প্রতিনিয়ত সরকারের মদদে বিরোধী নেতা-কর্মীদের জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারান্তরীণ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, অনেকে এরই মধ্যে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। আবার অনেককে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জামিন বাতিল করে আবারও জেলে ঢোকানো হচ্ছে। অযথাই জামিন দিতে বিলম্ব করা হচ্ছে। ঈদের আগে সব নেতা-কর্মীর কারামুক্তি নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সারা দেশে পুলিশি অভিযান শুরু হয়। ওই সংঘর্ষের পরদিনই গ্রেপ্তার হন মির্জা ফখরুল। এরপর একে একে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ সম্মুখ সারির নেতারাও গ্রেপ্তার হন।
বিএনপির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৬৪৫টির বেশি মামলা হয়েছে। ২৫ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। নির্বাচনের পর নেতা-কর্মীদের জামিন প্রক্রিয়া এগোতে থাকে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। চার দিন পর কারামুক্ত হন মির্জা আব্বাস। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাও ইতিমধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্ত করতে দল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। অনেকেই জামিন পাচ্ছেন না, আবার জামিন পেলেও বাতিল করা হচ্ছে।
বিএনপির আইন শাখা বলছে, নির্বাচন ঘিরে গ্রেপ্তার হওয়া অধিকাংশ নেতা-কর্মীই কারামুক্ত হয়েছেন। তবে এখনো সারা দেশে অন্তত ৫০০ নেতা-কর্মী কারাবন্দী রয়েছেন।