শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন কেমন হবে তা দেশবাসী জানে: রিজভী

0

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে নির্বাচন কেমন হবে তা তো দেশবাসী জানে।

রিজভী বলেন, ইতোপূর্বে বর্তমান সরকারের সঙ্গী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. শাহাদাত হোসেন চৌধুরীসহ বহু আওয়ামী লীগ নেতা সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। রাতের অন্ধকারে নৌকায় সীল মেরে বাক্স ভরা হয়েছিল। ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে দেশের মানুষের।

তিনি আরো বলেন, ঢাকাস্থ জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকিসহ বিদেশীরাও বলেছেন- পৃথিবীতে একমাত্র বাংলাদেশেই রাতের বেলায় ভোট হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে জনগণের ভোট ডাকাতি করে রাতের গভীরে সরকারের জন্ম দেয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালে দলহীন নির্বাচনে অভিনব কায়দায় দিনে ভোট ডাকাতি করে ১৫৪ জনকে অটো পাস এমপি বানানো হয়েছিল। ভোটকেন্দ্রে কোনো ভোটার দেখা যায়নি। আর এবার চোর-ডাকাত দিয়ে ভিন্ন কোনো পন্থায় ভোটের নামে আরেকটি ভাঁওতাবাজির প্রহসন করতে মরিয়া, বেপরোয়া ও ভয়ঙ্কর মারমুখী হয়ে উঠেছে আওয়ামী সরকার। ভোটারবিহীন নির্বাচন করার জন্য বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করতে পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করে ঘৃণ্য-দূষিত বাতাবরণ তৈরি করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন কেমন হবে তা তো দেশবাসী জানে।

‘পুলিশের এখন পৌষ মাস, আর জাতির সর্বনাশ’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আটক করে কারও কাছ থেকে ১ লাখ, কারও কাছ থেকে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। টাকা দিতে না পারলে মিথ্যা মামলায় জেলখানায় নিক্ষেপ করছে।’

এসব করে পার পাওয়া যাবে না জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জনগণ রাজপথে নেমেছে অধিকার আদায়ের দুর্বার আন্দোলনে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে। আপনারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। নির্বাচন স্থগিত করে আগে পদত্যাগ করুন। না হলে এই ফরমায়েশি তফসিলে বাংলাদেশে একতরফা নির্বাচন হবে না। জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে।’

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পরিস্থিতি তুলে ধরে রিজবী বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে সাতটি। আসামি করা হয়েছে ৯৭৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে (এজাহার নামীয়সহ অজ্ঞাত)। মোট আহত ১২ জন।’

এছাড়া ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এর চার-পাঁচ দিন আগে থেকে এখন পর্যন্ত মোট গ্রেফতার ১৩ হাজার ২১০ জনের বেশি নেতাকর্মী। মামলা হয়েছে ২৯৬টির বেশি। ৪ হাজার ১৩৩ জনের বেশি আহত হয়েছেন। একজন সাংবাদিকসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান রিজভী।

অবৈধ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ হাজার-হাজার নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ চলমান আন্দোলনের একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক একতরফা নির্বাচনের জন্য ঘোষিত তফসিলের প্রতিবাদে আগামীকাল রোববার (১৯ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত মোট ৪৮ ঘণ্টা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমি সারাদেশের নেতাকর্মী ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com