রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের আবাসিক হলের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুনের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে চাঁদা না দেওয়া ও কেক কাটার সময় উপস্থিত না হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি ওই ছাত্রীর কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে। খোদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুনের বিরুদ্ধে উঠেছে এ অভিযোগ।
শনিবার (৪ মার্চ) দিনগত রাত ১২টার দিকে কলেজের নতুন হলের (ফাতেমা হল) দ্বিতীয় তলার ২০০৭ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর নাম লাইজু আফরিন। তিনি কলেজের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ফাতেমা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লাইজু কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিবার অনুসারী। তবে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হাবিবার সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না। মূলত এ কারণে লাইজু গত বৃহস্পতিবার হাবিবার জন্মদিনের আয়োজনে অংশ নেননি।
এছাড়া ছাত্রলীগ নেত্রী হাবিবার জন্মদিন উপলক্ষে হলে থাকা ছাত্রীদের সবার কাছ থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। লাইজু এই চাঁদাও দেননি। কেক কাটার সময়ও উপস্থিত ছিলেন না। এতে ক্ষুব্ধ হন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা।
এ ঘটনার সূত্র ধরে শনিবার রাতে লাইজুর কক্ষে নিজের অনুসারীদের দিয়ে ভাঙচুর চালান হাবিবা। কক্ষের জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেন তারা। এ সময় লাইজুর মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং তাকে মারধর করা হয়। নতুন হোস্টেলের ওই কক্ষে লাইজুসহ ১৪ জন থাকেন। ভাঙচুর ও মারধরের সময় ওই কক্ষ থেকে লাইজু ছাড়া অন্যদের বের করে দেওয়া হয়। কক্ষ ভাঙচুর ও ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেওয়ার সময় এক শিক্ষার্থী এগুলো মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। ভিডিওটি জাগো নিউজের হাতে এসেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী লাইজু আফরিন বলেন, আমি হাবিবার জন্মদিনের আয়োজনে চাঁদা দেইনি। কেক কাটার সময় যাইনি। বিষয়টি কেউ একজন ফেসবুকে পোস্ট করেন। ওই পোস্ট নাকি আমরা করিয়েছি, এজন্য আমার ওপর জুলুম করা হয়েছে।
লাইজু অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই রুম দখলের জন্য কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুন চেষ্টা করে আসছিলেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বাদানুবাদও হয়। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় শনিবার দিনগত রাতে জোর করে তার পছন্দের শিক্ষার্থীদের এই কক্ষে উঠিয়ে দিয়ে অন্যদের কক্ষ পরিবর্তন করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী তার কথা মতো কক্ষ পরিবর্তন করতে না চাইলে নির্যাতন করে জোর করে তার বিছানাপত্র ফেলে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী লাইজু বলেন, এমন ঘটনায় মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়েছি। বিষয়গুলো আগেই কলেজ প্রশাসনকে জানিয়েছি। যেখানেই কলেজের প্রশাসন রোববার এ বিষয়টি নিয়ে বসবেন তার আগেই তিনি (হাবিবা আক্তার সাইমুন) তার অনুসারীদের দিয়ে জোরপূর্বক এমন কাজ করেছেন। শেষ পর্যন্ত তারা ওই কক্ষটি দখল করেই নিয়েছেন।