একজন খারাপ তারেক রহমান ও গণমানুষের ভাবনা।
বিএনপি তার জোট সরকার নিয়ে সর্বশেষ দেশ শাসন করেছিল ২০০১-২০০৬ সময়কালে। জনাব তারেক রহমান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান হয়েও সরকারি কোন রকম পদে
যাননি, রাজনীতির রাস্তায় প্রবেশ করলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন কর্মীদের সাথে এবং সর্বোপরি দেশের সকল স্তরের গণমানুষের সাথে মিশে যাওয়া। তৎকালীন পত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে নিয়মিতই লক্ষ্য করতাম লোকটাকে বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে বেড়াতে। সাবলীল ভঙ্গিমায় মানুষকে বুকে টেনে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ দিবাগত রাতের। ওই রাতে তারেক রহমান সদলবলে বঙ্গবন্ধুর মাজারেই শুধু যাননি, গিয়ে তিনি মাজারের খাদেমকে ডেকে তুলে এনে ফাতেহা পাঠ করেন। আর তার বিপরীতে বঙ্গবন্ধু কন্যার থেকে কি ফেরত পান তা আমরা নিয়মিতই দেখে থাকি। শুধু হাসিনার মত নয় তার কয়েকভাগ প্রতিহিংসা তারেক রহমানের থাকলেও বহু আগেই দেশে একটি সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হতো।
যাই হোক মূল ঘটনায় আসি ২০০৪ সালে মেহেরপুরে। তারেক জিয়া তখন দেশের উপজেলা ঘুরে ঘুরে সম্মেলন করেছেন আর জনসাধারণের সাথে মিশে তাদের চাওয়া পাওয়ার কথা জানছেন। মেহেরপুরের উক্ত সম্মেলনে বক্তৃতা দিলেন, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে নেমে এলেন এলাকাবাসীদের কথা শুনতে। হঠাৎ এক বৃদ্ধ তারেক রহমানের কাছে গেলেন, তিনিও হাত মিলিয়ে বুকে টেনে নিলেন; বৃদ্ধ লোকটি তারেক রহমানের মাথায় হাত রেখে বললেন,
” বাপধন তুমি আইসেছো? জিয়ার ছেইলে তুমি ! জানো বাপধন তোমার বাবায়ও না দেশ ঘুরতে ঘুরতে আমাদের কাছে আইসে পৌছেছিলো, আইজকে তুমিও খুঁইজে খুঁইজে আমাদের কাছে আইসে গেলে। অনেক বড় হও বাপধন অনেক ভালো রাখুক আল্লাহ তোমাকে।”
ঘটনাটি বলছিলো প্রত্যক্ষদর্শী এক ভাই, তিনি আরো জানান উক্ত এলাকায় দলমত নির্বিশেষে তারেক রহমান তার ব্যক্তিত্বের জন্য এতটাই জনপ্রিয় যে তার পরদিন একজন আওয়ামী কর্মীও চায়ের দোকানে গর্ব করে বলছিলো ,
জানিস নেতার সাথে, হাত মিলিয়েছি,আর বলিস না কি যে ভালো মানুষ , কোন অহংকার নাই!”
এটুকু শেষ করেই ভাই আমাকে বললো, আচ্ছা তুমি কি ভাবতে পারো হাসিনার ছেলে জয় বা মেয়ে পুতুলের মাথায় গ্রামের মানুষগুলো হাত রাখছে, তাদের সাবলীলতা নিয়ে চায়ের দোকানে গল্প চলছে? আমি হেঁসে দিলাম।
আওয়ামী লীগ সরকারের একটা জেনারেটর আছে, যার রক্ষণাবেক্ষণ করে আওয়ামী থেকে শুরু করে বিএনপি পরিচয়ধারী বহু মানুষ, জেনারেটরটি ছিল কয়েকযুগ মেয়াদি ‘প্রোপাগান্ডা জেনারেটর’। হাওয়া ভবন থেকে শুরু করে কত কুৎসা রটানো হয়েছে তার সীমা নাই। তবে হ্যাঁ তারেক রহমানের ভুল নেই এ কথাটাও ভুল, তবে তার ভুল আমাদের ব্যক্তি জীবনেও একটি শিক্ষা আর তা হলো বন্ধু! তিনি বন্ধু নির্ধারণে ভুল করেছিলেন আর যার জন্য তাকে বহু মাশুল গুণতে হয়। তার নাম ভাঙিয়ে তার বন্ধুরা বিভিন্ন সময় তার নাম ব্যবহার করে নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে আর পরবর্তীতে মূল্য চুকাতে হয় তারেক রহমানকেই। ছোট্ট একটা উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
ধরুন আপনি একজন তরুণ এবং আপনার মা বাবা এলাকার চেয়ারম্যান। বুঝতেই পারছেন তখন আপনার বাবা মায়ের চেয়ে আপনার কাছে বসন্তের কোকিলদের আনাগোনা বেড়ে যাবে। আপনার বিশাল বন্ধুমহল তৈরি হলো আপনাআপনিই। বিভিন্ন সময় আপনাকে উস্কানি দিতে থাকলো। ধরুণ আপনার এক বন্ধুর টাকার প্রয়োজন, আপনার কাছে চাইলে জানালেন নেই আপনার কাছে, তখন আপনার বন্ধু বললো, আরে দেখ বন্ধু তুই হলো চেয়ারম্যানের ছেলে ! তোর টাকা না থাকে কিভাবে চল বাজার থেকে টাকা তুলি! আপনি জবাবে না জানালেন। কিন্তু আপনার বন্ধু ঠিকই আপনার পরিচয় দিয়ে বাজারের বড়বড় দোকান থেকে টাকা তুললেন, বদনাম আপনার উপরেই গেলো। ভোগ করলো অন্যজন কিন্তু দায় পড়ছে আপনার উপর। ঠিক এমনটাই হয়েছে তারেক রহমানের বেলায়। কম বয়সে রাজনীতিতে প্রবেশ করে হয়েছিলেন অনেকের লক্ষ্যবস্তু আর অনেকেরই বড় হবার পথ কিন্তু আপনি কিছুই পেলেন না হারানো ছাড়া।
আবারএক আওয়ামী লীগ সমর্থকই সেদিন বলে ফেললেন , তারেক রহমান বাংলাদেশের হতভাগাদের মাঝে বিশেষ একজন। কৈশোরে বাবাকে হারান,সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের কারণে মাকে আর দশটা ছেলের মত করে পাননি আর পাবেনই বা কিভাবে? তার মা তার একার নয়, দেশের অসহায় নির্যাতিত মানুষের মাও বেগম খালেদা জিয়া। ভাইটিকেও হারান খুব দ্রুত সাথে চলে নিজের নির্যাতিত সংগ্রামী জীবন। হ্যাঁ তিনিই আমাদের নেতা বাংলাদেশের ভবিষ্যত তারেক রহমান। বেশ কয়েকবছর আগে প্রবাসী এক আওয়ামী সমর্থকের থেকেই শোনা ‘ তারেক রহমানই ভবিষ্যত বাংলাদেশের ভরসা , জয় পুতুল তার উচ্চতায় কখনো পোছাবেন না যতদিনই রাজনীতি করুক! বুকটা ভরে যায় যখন আওয়ামীলীগের থেকে এমনটা শুনি, এমনই ক্যারিশম্যাটিক নেতা তিনি! অনেকে প্রশ্ন তোলেন পরিবার ভিত্তিক রাজনৈতিক চর্চা কেন করছ বিএনপি? কেন তিনিই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলেন?
তার মত ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত কে আছেন আর বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন? বলা সহজ ,করা কিন্তু কঠিন!! আপনি চেষ্টা করলেই জয় হতে পারবেন কিন্তু তারেক জিয়া হতে আপনাকে সব হারানোর কথা মাথায় রেখে ময়দানে নামতে হবে!
যাই হোক, আল্লাহ আপনাকে হেফাজত করুক আর দেশের মাটি ও মানুষকে নিয়ে আপনার স্বপ্ন পূরণে আল্লাহ সহায় হোন।