ঈশ্বরগঞ্জে ভিজিডির চাল আত্মসাৎ: চেয়ারম্যানের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ভিজিডি চাল আত্মসাৎকারী রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলী ফকিরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কার্ডধারী ভুক্তভোগীরা।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে ভুক্তভোগীদের আয়োজনে ওই বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। মিছিলটি রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে বের হয়ে শাহগঞ্জ বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে শেষ হয়।
জানা যায়, ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট বা দুস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচির আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে অনলাইনে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নে ৩১৫ জন নারীর নাম চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক কার্ডধারী প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু ওই তালিকার ১২৬ জন ২১ মাসের চাল পায়নি।
ইউনিয়নের কার্ডধারীরা এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে তিনি সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সানোয়ার রাসেলকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কায়সার তালুকদার ও মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমাতুজ্জহুরা।
ওই কমিটি ২০ নভেম্বর তদন্ত শুরু করে। তদন্তের প্রথম দিনেই ১২৪ জন কার্ডধারীর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। তাদের মধ্যে ২৮ জন চাল পাননি। দ্বিতীয় দিন ২৩ নভেম্বর আরো ১১০ জন কার্ডধারীর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়, তাদের ২০ জন চাল পাননি বলে নিশ্চিত হয় তদন্ত কমিটি।
ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ও ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ২৬ নভেম্বর নয়জন কার্ডধারীর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। তাদের সাতজন চাল পায়নি। ২৯ নভেম্বর ২৫ জন কার্ডধারীর সাক্ষাৎকার নিলে তাদের ২৪ জনই চাল পাননি বলে নিশ্চিত হয় তদন্ত কমিটি।
সরেজমিন সাক্ষাৎকারে মোট ৭৯ জন কার্ডধারী ২১ মাসের চাল পাননি বলে তদন্ত কমিটি জানতে পারে। এছাড়া আরো ৪৭ জন কার্ডধারীর কোনো সন্ধান খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি।
ভিজিডি পরিপত্রে প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল বিতরণের নিয়ম থাকলেও একসাথে তিন মাসের চাল বিতরণের অভিযোগও রয়েছে ভুক্তভোগীদের।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা কমিটির আহ্বায়ক সানোয়ার রাসেলের কাছে ৭ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। সেই প্রতিবেদনে ভিজিডির চাল বিতরণ অনিয়মের বিষয়টির প্রমাণ মেলেছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সানোয়ার রাসেল বলেছেন, উল্লিখিত ঘটনায় ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম মুদাব্বিরুল ইসলাম ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আলী ফকির দায় এড়াতে পারেন না।