ভোটডাকাতি করতে আবারো নির্বাচনের আগে জনপ্রিয়তার ভুয়া জরিপ!
দেশে গুরুত্বপূর্ণ কোনো নির্বাচন আসলেই মানুষের কাছে নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রমাণের জন্য পকেট সংগঠন তৈরী করে জরিপ পরিচালনা করে শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়। ঘরে বসে নিজেদের মতো করে একটি ভুয়া প্রতিবেদন তৈরি করে সেই সংস্থার নামে প্রকাশ করে। মূলত আসন্ন নির্বাচনে ভোট ডাকাতি জায়েজ করতেই জনপ্রিয়তার কথিত জরিপ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ।
দেখা গেছে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একদাশ সংসদ নির্বাচনের আগেও এরকম জরিপ দেখিয়ে ছিলো তারা। ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (আইআরআই) নামে জয়ের একটি পকেট সংগঠন দিয়ে তারা একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে। বলা হয়েছিল এটা ওয়াশিংটন ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। আসলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগের কিছু লোক দিয়ে জয় এ প্রতিষ্ঠানটি করেছে। ভুয়া এই প্রতিষ্ঠানের জরিপের ফল ছিল- দেশের ৬৬ শতাংশ নাগরিক শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি ৬৪ শতাংশ নাগরিক আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
এরপর এই ভুয়া জরিপের ফল নিয়ে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তারা প্রচার করতে থাকে যে দেশের ৬৪ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগের প্রতি সন্তোষ্ট। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় সুনিশ্চিত। এরপরই তারা ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে ইতিহাসের নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির ঘটনা ঘটায়।
ঢাকা দুই সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগে আবারও জনপ্রিয়তার আরেকটি ভুয়া জরিপের ফল প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। এবারও তাদের টার্গেট সিটি নির্বাচনের ভোট ডাকাতি জায়েজ করা।
রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল নামে শেখ হাসিনার ছেলে জয়ের পকেট সংস্থা দিয়ে তারা এই জরিপ তৈরি করেছে। ভুয়া এই জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর দেশের ৮৬ শতাংশ মানুষের আস্থা আছে। আর আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর সন্তুষ্ট ৮৫ ভাগ মানুষ। ভুয়া এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিএনপির কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ।
সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন। এই আবুল হাসনাত মিল্টন আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেখ হাসিনার কথিত উন্নয়নের ছিটেফাটাও লাগেনি ঢাকা শহরে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাস, চাঁদাবিজ, টেন্ডারবাজি, মানুষের বাড়ি-ঘর জমি দখল, মাদক ব্যবসা, খুন-হত্যা, ধর্ষণসহ তাদের বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে ঢাকা অতিষ্ট। এছাড়া সাম্প্রাতিক ক্যাসিনো কাণ্ড প্রকাশ হওয়ার পর ঢাকাবাসী আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
এছাড়া, উন্নয়নতো ছিল শুধু সাইদ খোকন ও আতিকুল ইসলামের বক্তৃতা বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে ঢাকাবাসীর মৌলিক সমস্যা সমাধানে আওয়ামী লীগের দুই মেয়রপ্রার্থী কিছুই করতে পারেনি।
জানা গেছে, একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার জরিপ প্রতিবেদন শেখ হাসিনার কার্যায়ে জমা পড়েছে। সিটি নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় আর মানুষ যদি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে তাহলে আ.লীগের প্রার্থীদের চরম ভরাডুবি হবে। এসব তথ্য পাওয়ার পরই কথিত এই জনপ্রিয়তার ভুয়া জরিপ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রদখল করে ভোট ডাকাতি ছাড়া আওয়ামী লীগের সামনে বিকল্প আর কোনো রাস্তা নেই। আসন্ন সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতিকে জায়েজ করতেই মূলত শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের তত্ত্বাবধায়নে সিটি নির্বাচনের আগে জনপ্রিয়তার এই ভয়া জরিপ প্রকাশ করেছে তারা।