১৬ কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আশঙ্কাজনক অবনতি ঘটেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সিটি নির্বাচন উপলক্ষে সারা সিটিতে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশই তৈরী হয়নি, যাতে করে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়। ইভিএমের প্রতি যে মানুষের অনাস্থা ও অনাগ্রহের কারণে নির্বাচন কমিশন মসজিদের মাইক দিয়েও ইভিএমের কার্যক্রম দেখাতে লোক খুঁজে পায়নি। মানুষ এটিকে প্রতারণার মেশিন বলেই মনে করছে। বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গণতন্ত্রধ্বংসকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা মনে করেন দেশবাসী সব বোকা আর তিনি খুব চতুর চালাক। তিনি দেশের মানুষকে ব্যাকরণ শেখান! সাধারণ মানুষ নুরুল হুদা সাহেবকে অনেক আগে থেকেই বিশ্বাস করে না। কতটা দলকানা হলে মানুষ এতোবড় নিলর্জ্জ হতে পারে।
রিজভী বলেন, গত রোববার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের প্রচারের সময় ওয়ারীতে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর বর্বর কায়দায় হামলা করে। সেই হামলায় তাদের মদদ ও সহযোগিতায় ছিলো পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ওয়ারী থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান তার ওপর মহলের সাথে যে কথাবার্তা বলছিলেন তার ভিডিও ক্লিপ সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তিনি বলছিলেন, যেখানে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলছেন,‘পরিস্থিতি ‘নরমাল’ (স্বাভাবিক) আছে। ইশরাকের (ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী) পার্টি মতিঝিল এলাকায় চলে গেছে। আর আমাদের যে পার্টি আছে, (নৌকার লোকজন) ওরা আছে-সেন্ট্রাল উইমেন্সের (সেন্ট্রাল উইমেন কলেজ) সামনে।’ এটা নিয়ে সিইসিকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তার জবাবে নুরুল হুদা বললেন,‘পার্টি মানে পুলিশ, মানে তাদের দল, পুলিশের সাথে যে লোকজন থাকে তাদেরকে পার্টি বলে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের এগারো বছরের শাসনামলে দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অগণিত অসত্য ও বানোয়াট মামলা দিয়ে নাজেহাল করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের ভয়ে নেতাকর্মীরা যেখানে এলাকাছাড়া, ঘরছাড়া সেখানে বিএনপি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ঢাকায় জড়ো করছে, আওয়ামী নেতাদের এধরণের বক্তব্য প্রদানের উদ্দেশ্যই হলো- তারাই বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রধারী দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়।
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে রিজভী বলেন, এদেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আশঙ্কাজনক অবনতি ঘটেছে। অথচ অমানবিক ও প্রতিহিংসাপরায়ণ অবৈধ সরকার বেগম জিয়ার বিপদজনক অসুস্থতাও ভ্রুক্ষেপ করছে না। জরুরী ভিত্তিতে দেশনেত্রীকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তিনি দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল: প্রেসব্রিফিং শেষে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো বিএনপি কার্যালয়ের নিকট এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মিছিলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনি, ছাত্রনেতা আখতার আহসান দুলাল, দেলোয়ার হোসেন রাসেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা নাসিরুদ্দিন নাসির, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মিল্লাত, সুজন, আসলাম, নীরব, শামীম, কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মামুন হোসেন ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য কে এম রেজাউল করিম রাজু, মো: ওমর ফারুক সাকিল চৌধুরী, তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদল নেতা মো: বেলাল হোসেন খানসহ ছাত্রদল কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। মিছিল শেষে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এক পথসভায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বক্তব্য রাখেন।