ক্ষমতা হারালে জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতনের ন্যায্য হিস্যা জনগণ আদায় করে ছাড়বে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের মানুষের মৌলিক মানবাধিকার আদায়ে নির্ভিক কন্ঠস্বর ও গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ সকাল ১০-৩০টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল মহাখালী কাঁচাবাজার থেকে শুরু হয়ে বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। মিছিলে বিএনপি’র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
মিছিল শেষে এক পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, “দেশে এখন গুনী, সম্মানীয় ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের মান-সম্মান ধুলোয় লুটোপুটি খাচ্ছে। দেশজুড়ে চলছে তুঘলকী শাসন। ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’ এটি তোয়াক্কা না করে বরং এখন দেশে চলছে এক ব্যক্তির চোখ রাঙ্গানীর শাসন। এজন্যই আমরা দেখছি দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী যিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ অথচ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে কারাগারে রাখা হয়েছে এবং দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এই সাবেক প্রধান বিচারপতির একটি রায় আওয়ামী সরকারের বিপক্ষে ছিল বলেই আওয়ামী সরকার তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ হওয়ার অংশ হিসেবে সম্প্রতি একজন মন্ত্রী তাঁকে নিয়ে যে অশালীন ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন-তাতে এটি প্রমান হয়েছে যে, দেশের বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে রেখে সর্বক্ষেত্রে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চায় সরকার। দেশে আইনের শাসন নেই বলেই চারবারের প্রধানমন্ত্রী, যিনি বারবার হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে সাহসিকতার সাথে লড়াই চালিয়ে স্বৈরশাহীর কবল থেকে উদ্ধার করেছেন, যিনি গণমানুষের সর্বাধিক প্রাণপ্রিয় নেত্রী সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাবন্দী করে রেখেছেন প্রতিহিংসাপরায়ণ বর্তমান সরকারপ্রধান।
বিনা ভোটে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ভালভাবেই জানে যে, এবার ক্ষমতা হারালে জনগণের ওপর নির্বিচারে চলা জুলুম-নির্যাতনের ন্যায্য হিস্যা জনগণ আদায় করে ছাড়বে। আর এই উপলব্ধি থেকেই গদি হারানোর ভয়ে পথ নিষ্কন্টক করতে এবং জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রনায়ক বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে-যাতে জনগণের ভোট ও নির্বাচনের অধিকার নিয়ে কেউ প্রতিবাদী হতে সাহস না পায়।
দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতিশীল হচ্ছে। কিন্তু এতদসত্বেও বেগম জিয়ার প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার ও সরকারপ্রধানের নিষ্ঠুর আচরণ যেন থামছেই না। দেশনেত্রীকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে সরকার। বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের এধরণের অমানবিক আচরণের লক্ষ্য একটাই-তাহলো তাঁকে তিলে তিলে শেষ করে দিতে পারলেই ক্ষমতার মসনদ হারানোর কোন ভয় থাকবে না। কিন্তু দেশের একজন জনপ্রিয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সরকারের এই নজীরবিহীন হিংসাশ্রয়ী নিষ্ঠুর আচরণে সারাদেশের মানুষের ক্ষোভ এখন তরঙ্গায়িত হয়ে উত্তাল ঢেউয়ে রুপান্তরিত হচ্ছে। দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ স্বৈরশাহীর লাল দেয়ালের লৌহকপাট ভেঙ্গে গণতন্ত্রের বলিষ্ঠ সিপাহসালার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে দৃঢ় অঙ্গিকারাবদ্ধ।
আমি আবারও অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং তাঁকে তাঁর পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগ দানের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি কারাবন্দী সকল নেতাকর্মীরও নি:শর্ত মুক্তি দাবি করছি।”
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এর নেতৃত্বে মিছিল শুরু হলে মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ‘গণতন্ত্রের মা’ এদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে বলিষ্ঠ কন্ঠে শ্লোগানে শ্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলেন।