পুলিশের উপস্থিতিতে র‌্যাবের হাত থেকে হত্যা মামলার আসামি ছিনিয়ে নিলো ছাত্রলীগ

0

পুলিশের উপস্থিতিতে র‌্যাবের হাত থেকে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের বহিষ্কৃত এক ছাত্রলীগ নেতা ও হত্যা মামলার আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বগুড়া র‌্যাবের একটি দল সাতমাথায় গিয়ে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রউফকে আটক করে নিয়ে যেতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের জেলা অফিসের আশপাশ থেকে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এসময় পুলিশের একাধিক সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

আব্দুর রউফকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। বগুড়া সাংবাদিকদের ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে এ দৃশ্য ধরা পড়েছে।

আব্দুর রউফ বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০২১ সালের মার্চে বগুড়া ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাকদীর ইসলাম ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাকদীর হত্যার প্রধান আসামি ছিলেন আব্দুর রউফ। তাকদীর হত্যার ঘটনায় আব্দুর রউফকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই মামলায় বেশ কিছুদিন জেলে ছিলেন আব্দুর রউফ। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, বগুড়া র‌্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার তৌহিদুল মুবিন জানান, তারা আব্দুর রউফকে ভুল করে ধরেছিলেন। পরিচয় পাওয়ার পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয় বলেন, ‘আব্দুর রউফ আমাদের ছাত্রলীগের কেউ নন। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগ করেন। আব্দুর রউফ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। গতকাল আমাদের পার্টি অফিসে ভাঙচুর-আগুন দেওয়ার ঘটনায় আজ আমরা সাতমাথায় বিক্ষোভ মিছিল করি। সেই মিছিলের সময় তিনি সেখানে ছিলেন। তখন র‌্যাবের একজন সদস্য তাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেসময় আমাদের ছেলেরা র‌্যাবের সঙ্গে কথা বলে তাকে নিয়ে আসেন। র‌্যাব সম্ভবত তার সঙ্গে কথা বলার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল।’

সম্প্রতি বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর বিরোধিতা করে জেলা ছাত্রলীগের একটি অংশ কমিটি ঘোষণার পর থেকেই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করে আসছে। কমিটিকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ প্রকাশ্যে মহড়া দেওয়া শুরু করে। জেলা আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয় এই কমিটিকে কেন্দ্র করে। যদিও নতুন ঘোষিত কমিটিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণত সম্পাদক পূর্ণ সমর্থন দিয়ে আসছেন। এরমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ বিদ্রোহীদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছে। এতে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বাড়ছে দিন দিন। তবে, আব্দুর রউফকে বর্তমান কমিটির নানা প্রোগ্রামে শুরু থেকেই প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে।

বগুড়া র‌্যাব-১২ এর কোম্পানি কোমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার তৌহিদুল মুবিন বলেন, ‘আসলে আমরা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত এই নেতাকে আটক করতে যাইনি। আমরা যাকে আটক করতে গিয়েছিলাম তার নামও আব্দুর রউফ। সে প্রতারণা চক্রের একজন সদস্য। ভুলক্রমে এই রউফকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানতে পারি যে, আমাদের টার্গেট আসামির বাবার নামের সঙ্গে কোনো মিল নেই। তাই তাকে যেতে দেওয়া হয়েছে।’

র‌্যাবের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে যেখান থেকে ধরেছিলাম, সেখানে ছাত্রলীগের মিছিল চলছিল। তারা মনে করেছিল, আমরা তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছি, সেজন্য তারা তাকে সাতমাথা থেকেই নিয়ে গেছে।’

সূত্র: দ্য ডেইলি স্টার

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com