লুটের রাজনীতি রাজনীতি থেকে বের না হলে দেশের উন্নতি করা যাবে না: রুমিন ফারহানা
লুটের রাজনীতি রাজনীতি থেকে বের না হলে দেশের উন্নতি করা যাবে না জানিয়ে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা খাতে আমাদের বেশি বরাদ্দ দেওয়ার কথা, সেটা দেওয়া হয় না। কারণ এখান থেকে লুটপাট করা যায় না। অবকাঠামোর দিকে আমাদের নজর বেশি। প্রথম কারণ হলো মানুষকে দৃশ্যমান কিছু দেখিয়ে ভুলিয়ে রাখা যায়। দ্বিতীয় কারণ, এর থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা লুটপাট করা যায়। এই যে লুটের রাজনীতি, সবকিছু খেয়ে ফেলার রাজনীতি— এগুলো থেকে বের হতে না পারলে আমরা উন্নতি করতে পারব না।
রুমিন ফারহানা বলেন, আমার বাবাকে জেলে যেতে দেখতাম স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারে সময়। কিন্তু কখনো আমি এই ভয়টা পাইনি যে আমার বাবা আর কখনো ফিরে আসবে না অথবা আমার বাবা হারিয়ে গেছে— এমন ভয়ও ছিল না। ভয় ছিল না— আমার মা দরজায় দরজায় ঘুরবেন, আমার বাবা কোথায়?
গতকাল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্মের আয়োজনে ‘জনশুনানি : জাতীয় উন্নয়ন ও স্থানীয় বাস্তবতা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আজ উন্নয়ন নিয়ে অনেক আলাপ হয়। উন্নয়ন নিয়ে অনেক আলাপ শুনেছি। উন্নয়ন মানে কি? ডেভেলপমেন্ট অব ফ্রিডম বইয়ে অমর্ত্য সেন পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, উন্নয়ন হচ্ছে দারিদ্র, দমনকারী অপশাসন, রাষ্ট্রীয় সুবিধা থেকে বঞ্চনা, অর্থনৈতিক অসহিষ্ণুতা, নিপীড়ন থেকে মুক্ত থাকা। এর কোনোটা আমরা অর্জন করতে পেরেছি? পারিনি। উন্নয়নকে আমরা দালান কোঠা বা অবকাঠামো নির্মাণের মতো সীমাবদ্ধ জায়গায় নিয়ে গেছি।
রুমিন ফারহানা বলেন, আমি একজন দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজনীতিবিদ হিসেবে দুই ধরনের রাজনীতিকে কাছ থেকে দেখেছি। যখন আমার কলিগদের দিকে তাকাই তখন আমি একজন বন খেকো দেখি, পাহাড় খেকো দেখি, ব্যাংক খেকো দেখি, টাকা পাচারকারী দেখি, মাদক ব্যবসায়ী দেখি। এই ধারা যতদিন পরিবর্তন না হবে আমরা যেই প্রান্তিকটা থেকেই আসি না কেন, সেই প্রান্তিকটা থেকে উত্তরণের কোনো পথ খোলা নেই। রাজনীতিকে আগে সুস্থ ধারায় আনতে হবে।
রাজনীতিবিদদের বেশি কথা বলার সমালোচনা করে রুমিন ফারহানা বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি তারা শুনি কম বলি বেশি। আজ এখানে এসে মনে হলো আমাদের শোনাটা খুব প্রয়োজন ছিল, নিজেকে ঋদ্ধ করার জন্য। যাদের নিয়ে কাজ করতে চাই, যাদের নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই, যাদের নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ রচনা করতে চাই তারা কী ভাবছে, তারা কী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে? তাদের দিন কীভাবে কাটছে সেটা জানাটা খুব জরুরি।